কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে গুলিতে এক নারী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মা ও মেয়ে। আজ সোমবার ভোরে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড আশ্রয়শিবিরে এ ঘটনা ঘটে। রোহিঙ্গাদের দাবি, ডাকাত সালমান শাহ গ্রুপের গুলিতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
নিহত নারীর নাম জমিলা বেগম (৩০)। তিনি চট্টগ্রামে বসবাস করেন। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তাঁর বড় বোন মনিরা বেগমের কাছে টেকনাফের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বেড়াতে এসেছিলেন। গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন নিহত জমিলার বড় বোন মনিরা বেগম (৪৫) ও তাঁ মেয়ে নুর ফাতেমা (২৬)। মা-মেয়ে আশ্রয়শিবিরটির সি-ব্লকের ৮০৬/১ শেডে বসবাস করেন। মনিরা বেগম আশ্রয়শিবিরে সি-ব্লকের ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (নারী ব্লক মাঝি)।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, সশস্ত্র সালমান শাহ গ্রুপের সদস্যদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
নিহত নারীর পরিবার, রোহিঙ্গা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর চারটার দিকে মনিরা বেগমের ঘরে ডাকাতি করতে যান সালমান শাহ গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসী মো. শফি, নুর কালাম, মো. আলম, আবুল ফয়েজ, সাইফুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, হিলিবা মনো, আবদুল্লাহ, হুসাইন্না ও আনোয়ার ইসলাম। এ সময় মনিরা বেগম, তাঁর মেয়ে নুর ফাতিমা ও মনিরার বোন জমিলা বেগমকে নির্যাতন করা হয়। সন্ত্রাসী গ্রুপ পালিয়ে যাওয়ার সময় ১২-১৫টি এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে জমিলা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন মনিরা বেগম ও তাঁ মেয়ে নুর ফাতেমা। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে আশ্রয়শিবিরসংলগ্ন আইপিডি হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির কয়েকজন নেতা বলেন, শুধু নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির নয়, ডাকাত সালমান শাহ গ্রুপের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল জাদিমোরা, শালবাগান, মোচনি, লেদা ও আলীখালী রোহিঙ্গার শিবিরের বাসিন্দারা।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, নিহত জমিলার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জেলা পুলিশের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ১২৯টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত ২৪টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।