চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ উপনির্বাচন

দুই বিদ্রোহীর সমর্থিত ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছেন না আ.লীগ প্রার্থীর সমর্থকেরা

রহনপুর এবি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের ভিড়। তবে সেখানে দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের দেখা যায়নি
ছবি: প্রথম আলো

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার (আপেল প্রতীক) ও খুরশিদ আলম ওরফে বাচ্চুর (মাথাল প্রতীক) সমর্থক ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগের প্রার্থী মু. জিয়াউর রহমানের কর্মী-সমর্থকেরা। এ অভিযোগ করেছেন ওই দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা।

আজ বুধবার সকাল থেকে গোমস্তাপুর উপজেলার খয়রাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রহনপুর এবি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে আপেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের দেখা যায়নি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রহনপুর স্টেশন বাজার এলাকায় আপেল প্রতীকের কর্মী মোস্তাক হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রহনপুর এবি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের পাশেই অবস্থান করছিলাম। সেখানে নৌকার কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন। হঠাৎ তাঁরা আমাদের মেরে তাড়িয়ে দেন। তাঁরা আমাদের কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে লিফলেট কেড়ে নেন।’

আজ সকাল থেকে আপেল প্রতীকের প্রার্থী ও রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারকে মাঠে দেখা যায়নি। খোঁজ নিতে মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গেলে তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তাঁর ছেলে আহসান উদ্দীন সরকার বলেন, তাঁর বাবা এখন অসুস্থ। তিনি এখন কিছুই বলবেন না।

বাড়ির বাইরে মোহাম্মদ আলীর ভাগনে শফিউল আজম বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, প্রায় ৭০ শতাংশ কেন্দ্রে আপেল প্রতীকের ভোটারদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’

মাথাল প্রতীকের প্রার্থী ও গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খুরশিদ আলম প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়িয়া ও বড়গাছি এলাকার দুটি কেন্দ্র, গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাঁর ভোটারদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা এর সঙ্গে জড়িত বলে তিনি দাবি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মু. জিয়াউর রহমান বলেন, তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা কাউকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেননি। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এসব অভিযোগ তুলছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কোনো প্রার্থীর কাছ থেকে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সর্বোচ্চ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোটার উপস্থিতি কম

সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১৮০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বেলা একটা পর্যন্ত এ আসনে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫০ জন।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রহনপুর এবি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের কোনো লাইন দেখা যায়নি। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১৬ শতাংশ। এ কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা তিন হাজার।

এর আগে খয়রবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে পুরুষ ও নারীদের ছোট লাইন দেখা গেছে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফিরোজ আলী বলেন, ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩২৬টি। এ কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ৬৫০।