মিঠাপুকুরে কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

রংপুরের মিঠাপুকুরে এক কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের মিঠাপুকুরে এক কিশোরকে (১৬) গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গতকাল রোববার ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোরের পরিবারের অভিযোগ, প্রেমের সম্পর্কের জেরে এক প্রতিবেশী ও তাঁর লোকজন এই নির্যাতন করেছেন। তবে ওই প্রতিবেশীর দাবি, ছেলেটি উত্ত্যক্ত করায় তাকে শাসন করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের একটি গ্রামে। ওই গ্রামেই নির্যাতনের শিকার কিশোরটির বাড়ি। তার বাবা হতদরিদ্র। কিশোরটি বাবার সঙ্গে মাঠেঘাটে শ্রমিকের কাজ করে।

গত শনিবার বিকেলে ওই কিশোরকে মারধর করা হয়। গতকাল নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ওই কিশোরকে রশি দিয়ে একটা গাছের সঙ্গে শক্তভাবে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হচ্ছে। আবার কেউ তাকে কিলঘুষি মারছে। এ সময় দেখা যায়, ইউনিফর্ম পরা গ্রাম পুলিশের এক সদস্য ওই কিশোরকে বেঁধে রাখা রশির প্রান্ত টেনে ধরে আছেন।

এলাকার লোকজন জানান, শনিবার বিকেলে মেয়ের পরিবারের লোকজন ওই কিশোরকে তার বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়। মেয়েটির বাড়ির উঠানে রশি দিয়ে শক্ত করে গাছের সঙ্গে বেঁধে কিশোরকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। নির্যাতনে কিশোরটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে মিঠাপুকুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

কিশোরের দাদি (৮০) আহাজারি করে বলেন, ‘বিনা দোষে ওরা মোর নাতিটাক গাছোত বান্দিয়া গরুর মোতোন ডাঙ্গাইছে। ফির পুলিশ ডাকেয়া জেলোত পাটাইছে। আল্লাহ ওমার বিচার করবে।’

তবে কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেন, ‘আমার মেয়েকে বারবার পথেঘাটে বিরক্ত করত ওই ছেলে (কিশোর)। তাই তাকে ধরে একটু শাসন করা হয়েছে।’

মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ গতকাল রাতে মুঠোফোনে বলেন, ওই এলাকার কিছু লোক জানিয়েছেন, ছেলেটি বিকেলে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকেছিল। এ কারণে তাকে ধরে কিছুটা মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে ১৫১ ধারায় মামলা নিয়ে আদালতের মাধ্যমে ছেলেটিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ আরও বলেন, ‘ওই ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটা দেখে আমরাও অবাক হয়েছি। এভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে ছেলেটিকে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। ভুক্তভোগী ছেলের পরিবারের লোকজন অভিযোগ দিলে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’