সাতক্ষীরায় আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে জলাধার ও পাখির অভয়াশ্রম রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা সাতক্ষীরা শহরের প্রাণসায়ের খালকে দখল ও দূষণমুক্ত করে প্রবহমান করা, সরকারি উদ্যোগে পতিত জায়গায় স্থানীয় জাতের বৃক্ষরোপণ, পাখির অভয়াশ্রম তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ ও পাখি শিকার বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন। এ ছাড়া সব প্রাণের জন্য পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য শহর তৈরির লক্ষ্যে অন্তত ২০ ভাগ বনভূমি ও ১৫ ভাগ জলাভূমি নিশ্চিত করা, নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় সকল শ্রেণি–পেশার মানুষের মতামত গ্রহণ ও পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানানো হয়। সর্বোপরি প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি সদয় আচরণ করার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, মানবসভ্যতা রক্ষা করতে হলে প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার বিকল্প নেই। আর প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় জলাধার ও বনায়নের গুরুত্ব সর্বাধিক। অথচ সাতক্ষীরায় ইচ্ছেমতো গাছ কাটা হচ্ছে; কিন্তু গাছ লাগানো হচ্ছে না। প্রতিবছর গাছ লাগানোর যে হিসাব দেওয়া হয়, তা সঠিক নয়। সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে রিসোর্ট, কলকারখানা ও ভবন নির্মাণ করা যাবে না বলে আইন থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। জেলায় কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে যেখানে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে ইটভাটা। ফলে জীববৈচিত্র্য ও সবুজবেষ্টনী নষ্ট হচ্ছে।
মানববন্ধনে জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, ইদ্রিস আলী, নাগরিক নেতা আলী নুর খান, শহীদুল ইসলাম, বিপ্লব হোসেন, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের মুশফিকুর রহিম, বারসিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, তামান্না খাতুন, বৈশাখী খাতুন প্রমুখ।
বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রাণবৈচিত্র্যসমৃদ্ধ একটি দেশ। কিন্তু সচেতনতার অভাবে ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে সবকিছু ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে। তাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় সবার এগিয়ে আসা উচিত।