সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীতে পানি বেড়েছে। আজ সোমবার সকালে শহরের ষোলঘর এলাকায়
সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীতে পানি বেড়েছে। আজ সোমবার সকালে শহরের ষোলঘর এলাকায়

সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে আবারও বাড়ছে নদ-নদীর পানি

সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী তিনটি ও ছাতক উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কিছু কিছু গ্রামীণ সড়ক প্লাবিত হয়েছে। ছাতকে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে গত শুক্র ও শনিবার বৃষ্টি না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছিল। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছিল কম। তবে গতকাল রাত থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একই সময়ে বৃষ্টি হচ্ছে চেরাপুঞ্জিতে। এতে পাহাড়ি ঢল নামছে। পানি বাড়ছে নদী ও হাওরে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে আজ সোমবার সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৫৩ মিটারে। এর আগের দিন একই সময়ে পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৩৪ মিটারে। এখানে ২৪ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ১৬ সেন্টিমিটার। এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। এ হিসাবে নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৫৩ মিলিমিটার।
ছাতক শহরের কাছে আজ সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৯ দশমিক ৩৩ মিটার। আগের দিন এখানে পানি ছিল ৯ দশমিক ২১ মিটার। এখানে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপরে আছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের যাদুকাটা, পাটনাই, কুশিয়ারা, নলজুর, চেলা, চলতি, রক্তি, বৌলাই—সব নদীর পানি বেড়েছে৷ এই পানি ঢুকছে হাওরে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন হাওরে পানি দরকার। বর্ষায় হাওরে পানি না হলে মানুষকে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার মাছের জন্যও হাওরে পানি দরকার।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা নদীর তীরের মইনপুর গ্রামের বাসিন্দা মহিবুল ইসলাম  জানান, মাঝখানে দুই দিন পানি কিছুটা কমেছিল। আজ (সোমবার) আবার বেড়েছে। নদীতে পানি বাড়ছে।

দোয়ারাবাজার উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দোয়ারাবাজার-বোগলাবাজার সড়কের সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সামনে সেতুর সংযোগ সড়কের মাটি সরে গেছে। এতে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে লক্ষ্মীপুর, বোগলাবাজার ও সুরমা ইউনিয়নের।

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, এই সড়কের দুই জায়গায় গাড়ি বদল করে যেতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কাজ করা হচ্ছে।

ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়ন উজানের ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে জেলার নদ-নদীর পানি আবার কিছুটা বেড়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে সুনামগঞ্জে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই।