ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় মনু নদে পানি বাড়ছে। এতে টিলাগাঁও, হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নে নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ১১টি স্থান ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এদিকে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যাকবলিত উপজেলাটির বিভিন্ন এলাকায় পানি বেড়েই চলেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টায় কুলাউড়ায় মনু নদের ‘মনু রেলসেতু পয়েন্টে’ বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর ‘শেরপুর পয়েন্টে’ বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
মনু নদের উৎপত্তিস্থল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। কুলাউড়ার শরীফপুর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে এটি। পরে হাজীপুর ও টিলাগাঁও ইউনিয়ন হয়ে রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ বখশ গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে বলেন, গতকাল বিকেল থেকেই পানি বেশি বেড়ে গেছে। স্রোতও প্রবল। রনচাপ, গাজীপুর, মন্দিরা, নয়াগ্রাম ও কাউকাপন এলাকায় নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের কিছু স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে সবাই আতঙ্কিত। বাঁধের অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মনু নদের উৎপত্তিস্থল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। কুলাউড়ার শরীফপুর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে এটি। পরে হাজীপুর ও টিলাগাঁও ইউনিয়ন হয়ে রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
টিলাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালিক বলেন, তাঁর এলাকার মিয়ারপাড়ায় দুটি ও হাজীপুর গ্রামে বাঁধের একটি স্থান ঝুঁকিতে আছে। এর মধ্যে হাজীপুরে বাঁধের প্রায় ৪০০ ফুট জায়গায় সম্প্রতি স্থানীয় উদ্যোগে মেরামতকাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাই ওই স্থান নিয়ে বেশি ভয়। মিয়ারপাড়ার একটি স্থানেও পাউবো মেরামতকাজ শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছিল। বৃষ্টির কারণে কাজ শুরুর আগেই বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যায়।
এদিকে শরীফপুর ইউনিয়নে থাকা বাঁধের তেলিবিল, বাগজুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এর আগে গত ১৭ জুন ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ভূকশিমইল, জয়চণ্ডী, কাদিপুর, ব্রাহ্মণ বাজার, বরমচাল ও ভাটেরা ইউনিয়ন এবং কুলাউড়া পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এসব এলাকার পানি হাকালুকি হাওরে গিয়ে পড়ে। পরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা নদী দিয়ে ওই হাওরের পানি নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু কুশিয়ারায় ধীরগতিতে পানি নামায় হাওরের পানিও ধীরগতিতে নামছে। এ অবস্থায় বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে দীর্ঘ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে আবারও ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এসব এলাকায় পানি বেড়েই চলেছে।