অতিরিক্ত বিলের প্রতিবাদে বাউফলে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ঝাড়ুমিছিল

পটুয়াখালীর বাউফলে পল্লী বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিলের প্রতিবাদে গ্রাহকদের ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ। সোমবার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর বাউফলে পল্লী বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিলের প্রতিবাদে আজ সোমবার গ্রাহকেরা ঝাড়ুমিছিল করেছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে পল্লী বিদ্যুতের বাউফল কার্যালয়ের সামনে শতাধিক গ্রাহক এই মিছিল করেন।

গ্রাহকদের অভিযোগ, এমনিতেই বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ তাঁরা। এর মধ্যে আবার মিটারের সঙ্গে বিলের কোনো মিল নেই। মনগড়া টাকার পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে ‘ভুতুড়ে বিল’ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে কোনো প্রকার প্রতিকার পাননি তাঁরা। এর প্রতিবাদেই তাঁরা এ ঝাড়ুমিছিল করেছেন।

উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মুরগির খামারি এস এম আমিনুল হক বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাঁর ৩ হাজার ৩১২ টাকা বিল আসে। ফেব্রুয়ারিতে বিল আসে ৪৫ হাজার ৯৮২ টাকা এবং মার্চে বিল আসে ৩৫ হাজার ১৭৪ টাকা। এপ্রিলে বিল আসে ৬০০ টাকা। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বিলের কাগজ হাতে পেয়ে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। তাঁর স্বাভাবিক বিল হওয়ার কথা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকার মধ্যে। এর মধ্যে এপ্রিলে ৬০০ টাকার বিলও যেমন স্বাভাবিক নয়, তেমনি ৩৫ বা ৪৫ হাজার টাকার মতো অস্বাভাবিক বিলও তাঁর হওয়ার কথা নয়। এ নিয়ে একাধিকবার অফিসে ঘোরাঘুরি করেও কোনো ফল পাননি। এ কারণে এই মিছিলে অংশ নেওয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫০ হাজারের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলে এ রকম অসামঞ্জস্য করা হয়েছে। কালাইয়া গ্রামের মো. আসাদুল বলেন, গত মে মাসে তাঁর বিদ্যুৎ বিল হয়েছে ২৭৩ টাকা। কিন্তু জুনের বিদ্যুৎ বিল এসেছে চার গুণের বেশি ১ হাজার ১১২ টাকা।

দাশপাড়া ইউনিয়নের খেঁজুরবাড়িয়া এলাকার মো. মনির রাঢ়ী বলেন, তাঁর মে মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ২২৫ টাকা। কিন্তু জুনের বিদ্যুৎ বিল সাড়ে চার গুণ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৭৪ টাকা। একইভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এক মাসের চেয়ে আরেক মাসে পাঁচ থেকে আট গুণ বিল বেশি হয় কীভাবে?

ঝাড়ুমিছিলে অংশ নেওয়া গ্রাহকেরা পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজীর কাছে তাঁদের অভিযোগ জানান। ইউএনও বশির গাজী বলেন, ‘গ্রাহকদের অভিযোগ শুনেছি। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানতে চাইলে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি আজ বাউফলে নেই, পটুয়াখালীতে আছেন। মিছিলের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। অতিরিক্ত বিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মে মাসে সাত দিন বিদ্যুৎ ছিল না। এ কারণে কিছুসংখ্যক গ্রাহকের আনুমানিক বিল করা হয়েছে। জুনে মিটার দেখেই সঠিকভাবে বিল করা হয়েছে। এ কারণে আগের মাসের বিল জুনের সঙ্গে যোগ হয়েছে। কিছু অসাধু ব্যক্তিরা ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য আজকে মিছিল করিয়েছেন।