আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মহান বিজয় দিবসের কনসার্টে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোয় আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম ওসমানী হাসানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে আমতলী পৌরসভার উদ্যোগে মেয়র নাইট কনসার্ট চলাকালে তিনি ভোটারদের পাশে থাকার অনুরোধ জানান।
আমতলী উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আবু জাহের আদালত পরিচালনা করেন। প্রশাসনের নির্দেশে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কনসার্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমতলী সুপার চত্বরে এ কনসার্টের আয়োজন করা হয়। ওই কনসার্টে বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর স্ত্রী ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাধবী দেবনাথসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি বলেন, অনুষ্ঠানে আমতলী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান সভাপতিত্ব করেন। শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম ওসমানী হাসান। ওসমানী যখন বক্তব্য দেন তখন রাত প্রায় ১০টা বাজে। এরপর প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাধবী দেবনাথ। ১১টার পর প্রশাসনের লোকজন সেখানে উপস্থিত হন। পরে তাঁরা ওসমানীর সঙ্গে কথা বলেন ও অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ওসমানী বক্তব্যের একপর্যায়ে বলেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি আমাদের প্রমাণ করতে হবে, আমরা এই স্বাধীনতার সপক্ষের।...আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে থাকার কোনো বিকল্প নাই। এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরকে শুভেচ্ছা জানাই। আগামী দিনগুলোতো আপনাদের সবাইকে পাশে পাব। আমাদেরকে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।’
ওসমানী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানের শুরুতে আমি সেখানে বক্তব্য রাখি। বক্তব্যে ঠিক কী বলেছি তা তো এখন মনে নেই। ম্যাজিস্ট্রেট এসে আমাকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে জরিমানা করেছেন, আমি জরিমানা দিয়েছি।’
আমতলী উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আবু জাহের বলেন, আমতলী পৌরসভার আয়োজনে ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে তাঁদের কাছে একটি অভিযোগ আসে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান। ঘটনাস্থলেই ওসমানী হাসানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আচরণ বিধিমালা, ২০০৮–এর ১৮ (১) ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি কনসার্ট আয়োজন করার বিষয়ে আমতলী পৌরসভার মেয়র তাঁদের কাছে বলেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন, সেখানে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা করা হবে না। কিন্তু তিনি সে কথা রক্ষা করেননি। সেখানে নির্বাচনী প্রচারণা হচ্ছে শুনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।