কুড়িগ্রামে বৃষ্টি না হওয়ায় স্বস্তি, পানি কমছে ধীরে ধীরে

কুড়িগ্রামে বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে আছে মানুষ। তবে পানি নামছে ধীরে ধীরে। রোববার সকালে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতলি চরে
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামে গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সমতল এলাকার পানি নামছে, কিন্তু ধীরে ধীরে। গতকাল রোববার রাতে এবং আজ সোমবার সকালে বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও গোখাদ্যের সংকট বাড়ছে। জেলায় এখনো প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

আজ সকাল ৯টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তথ্যমতে, কুড়িগ্রামের প্রধান নদ-নদীগুলোর মধ্যে ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৩ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার এবং হাতিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপরে আছে। তবে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন চর কলাকাটা, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বিন্দুর চর ঘুরে দেখা যায়, মানুষের বসতবাড়ি ও ঘর থেকে এখনো পানি নামেনি। অনেকের ঘরে এখনো বুকসমান পানি রয়েছে। এসব বানভাসি মানুষ কলার ভেলা ও নৌকায় আশ্রয় নিয়ে আছে।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতলীর চরের বাসিন্দা ছবুরা বেগম বলেন, ‘গত রাত থেকে বৃষ্টি নেই, বানের পানি একটু কমছে। এক সপ্তাহ থেকে চুলা বানের পানিতে ডুবে আছে। নিজের খাবার কিছু নাই। এর মধ্যে দুইডা ছাগল আছে, তাগো খাওন দিমু কী? ঘাস তো পানির নিচে। এহন ছাগল বাঁচানো দায় হইয়া গেছে।’

উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চর কলাকাটার বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বেড়ে চর কলাকাটার প্রায় এক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত দুদিনে মাত্র ‘এক টাকর’ (৮ ইঞ্চি) পরিমাণ পানি কমেছে। পানি খুব ধীরগতিতে নামছে। এভাবে নামতে থাকলে চর কলাকাটা থেকে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে যাওয়ার সড়ক জেগে উঠতে আরও এক সপ্তাহ লাগবে।

তিনি আরও জানান, চর কলাকাটার শতভাগ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ উপজেলা প্রশাসন গতকাল এখানে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। ত্রাণের জন্য সবাই অপেক্ষা করে আছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল হাই সরকার বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে এবং বিতরণও অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৯৭ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২১ হাজার ৩৩০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।