রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে হুমকি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আমি গতকাল অফিসে ছিলাম না। অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মাহমুদুর রহমান। তিনি নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আহত হয়ে বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম খালিদ সাইফুল্লাহ। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ফোকলোর বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তবে তাঁর অনুসারীদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে ছাত্রলীগ নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ ও তাঁর সহযোগীরা মাহমুদুরের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তাঁরা নিজেদের জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে ভুক্তভোগীর মুখমণ্ডল, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর করেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে না দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলেন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘গতকাল ইবলিশ (শেখ রাসেল মাঠ) চত্বরে বসে সে গাঁজা সেবন করছিল। সেখান থেকে গন্ধ আসায় আমি তাঁকে একটু দূরে সরে যেতে বলি। কিন্তু সে উল্টো আমাকে গালাগাল করে। তখন আমার একটা ফোন আসায় আমি সেখান থেকে চলে আসি। পরে টুকিটাকিতে যখন আমার সঙ্গে আবার দেখা হয়, তখনো সে আমাকে গালাগাল করে। এরপর আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, ক্যাম্পাসে কোন ইয়ারে পড়াশোনা করো এবং বোঝাই। এখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
মারধরের কারণ জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমার সাবেক প্রেমিকা তাঁর (সাইফুল্লাহ) বর্তমান গার্লফ্রেন্ড। এক দিন স্টেশন বাজারে তার (সাইফুল্লাহ) সঙ্গে দেখা হয়েছিল, কিন্তু কোনো দিন কথা হয়নি। কালকে মারধর করার সময় আমাকে বলেন, “সিনিয়রদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয় জানিস না?, বাজে সাউন্ড করিস” বলে মারতে থাকেন। পরে বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তোকে থাকতে দেব না।”’ তিনি গাঁজা সেবনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। প্রক্টর দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী রোববার বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’