জাহাঙ্গীরনগরের আঙ্গিনায় সমাবর্তনের আনন্দে শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন আজ। এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের আনন্দ
ছবি: প্রথম আলো

সকালে সূর্যের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবুজে ঘেরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কালো গাউন, কালো টুপি পরা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তাঁদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। দল বেঁধে বন্ধুদের নিয়ে কেউ আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ ছবি তুলছেন। ক্যাম্পাসজুড়ে আজ আনন্দ-উৎসবের মেলা। অনেকেই দীর্ঘদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে বন্ধুদের দেখা পেয়ে ফিরে গেছেন পুরোনো সেই দিনে।
আজ শিক্ষার্থীদের বিশেষ দিন। তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে বর্ণিল সাজে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কের পাশে শোভা পাচ্ছে নতুন করে লাগানো বাহারি রঙের ফুলের গাছ। ভবনগুলোর দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বর্ণিল বাতি।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), সপ্তম ছায়া মঞ্চ, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ, অমর একুশ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবন, শহীদ মিনার, নতুন কলাভবন, বটতলা, পরিবহন চত্বর, হলসহ বিভিন্ন এলাকায় স্নাতকেরা কালো গাউন, টুপি, কস্টিউম পরে সেলফি, গ্রুপ ফটোসেশনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ এ দিনে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পরিবার নিয়ে অনেকেই এসেছেন প্রিয় আঙিনায়।

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এসেছেন হাফিজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পরিবার নিয়ে সর্বোচ্চ শিক্ষা লাভের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নিতে আসতে পারাটা ভীষণ আনন্দের।

মো. আনোয়ার হোসেন ক্যাম্পাস ছেড়েছেন প্রায় এক যুগ আগে, এবার তিনি পিএইচডির সনদ নিচ্ছেন। বহু দিন পর পুরোনো বন্ধুদের পেয়ে শহীদ মিনার চত্বরে আড্ডায় তিনি মেতে উঠেছেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ এক যুগ পর ক্যাম্পাসের এত বড় আয়োজনের অংশ হতে পেরে গর্বিত। পুরোনো সেই অনাবিল স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছি। বন্ধুদের অনেকের সঙ্গে ফেলে আসা অতীতের সুখস্মৃতি নিবিড়ভাবে অনুভবের চেষ্টা করছি। ক্যাম্পাসের সেই রঙিন দিনগুলোতে ফিরে গেছি।’

সমাবর্তন উপলক্ষে মাকে নিয়ে এসেছেন বান্দরনের এ সিং মারমা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা নেই। এই আনন্দের সময়ে তাই মাকে নিয়ে এসেছি। মায়ের হাতে সম্মানের এই ক্যাপ পরেছি। এটি ভীষণ আনন্দের।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন প্যান্ডেলে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা সাড়ে তিনটায়। তবে আড়াইটার মধ্যে সবাইকে প্যান্ডেলের ভেতরে আসন গ্রহণ করতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সমাবর্তনে অংশ নিতে নিবন্ধন করা ১৫ হাজার ২১৯ জনের মধ্যে নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী ১১ হাজার ৪৪৪ জন, উইকেন্ড প্রোগ্রামের ৩ হাজার ৪৬১ জন, এমফিল ডিগ্রির ৩৪ জন ও পিএইচডি সম্পন্নকারী ২৮০ জন। সমাবর্তনে ১৬ জনকে স্বর্ণপদক দেওয়া হবে।