মারধরের পর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা খান তালাত মাহমুদকে (মাঝখানে) প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বেলা তিনটায়
মারধরের পর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা খান তালাত মাহমুদকে (মাঝখানে) প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বেলা তিনটায়

হুমকির পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ককে মারধর ছাত্রলীগের

হুমকির পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ককে মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনের শাটল ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। পরে বেলা তিনটার দিকে তাঁকে ধরে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। বেলা সাড়ে তিনটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই সমন্বয়ককে নিয়ে প্রক্টর কার্যালয়েই ছিলেন।

ওই সমন্বয়কের নাম খান তালাত মাহমুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় আছেন।
এর আগে ৭ জুলাই তালাত মাহমুদের বাবাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। হৃদয় আহমেদ নামের ওই ছাত্রলীগের কর্মী মুঠোফোন বলেছিলেন, ‘আপনার ছেলে কোটা আন্দোলন করছে, আন্দোলন থেকে সরে না এলে আপনার ছেলেকে জীবিত অবস্থায় পাবেন না, হয়তো আপনার ছেলের লাশটি পেতে পারেন।’ এ ঘটনায় ৯ জুলাই দুই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন খান তালাত মাহমুদ ও তাঁর বাবা।

হুমকির পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদকে মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। আজ বেলা আড়াইটায় শাটল ট্রেনে

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বেলা আড়াইটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাওয়া শাটল ট্রেনে করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নগরে ষোলশহর যাওয়ার কথা ছিল। বেলা সাড়ে তিনটায় ওই জায়গায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ছিল।

ঘোষণা শুনেই বেলা দুইটা থেকেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন উপপক্ষের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসের রেলস্টেশনে জড়ো হোন। পরে তাঁরা এ শাটল ট্রেনটি স্টেশনেই আটকে দেন। আটকে দিয়ে তাঁরা কয়েকজন শিক্ষার্থীর মুঠোফোন চেক করেন। একপর্যায়ে তাঁরা শাটল ট্রেনে তালাত মাহমুদকে পেলে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ও মারধর করে ট্রেন থেকে বের করেন। পরে ছাত্রলীগের ওই নেতা-কর্মীরা তালাত মাহমুদকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে বাধ্য করেন। স্লোগান দিতে দিতেই তাঁরা তালাতকে ধরে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

তালাত মাহমুদকে মারধরে জড়িত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী এবং বিজয় উপপক্ষের নেতা ও যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের অনুসারীরা।

জানতে চাইলে প্রদীপ চক্রবর্তী ও মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, কেউ তাঁকে মারধর করেননি। তালাত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন। আবার রাজাকার নিয়েও স্লোগান দিচ্ছেন। তাই তাঁকে প্রক্টর অফিসে বুঝিয়ে আনা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।