চড়-থাপ্পড় দেওয়ার জেরে চাচাতো ভাইকে স্কচটেপ দিয়ে হাত-পা বেঁধে খুন করেছে এক কিশোর। হত্যার পর একটি দিঘির কচুরিপানার নিচে লাশও গুম করা হয়। এই ঘটনার ১১ দিন পর আজ সোমবার নিহত কিশোর ইয়াছিন আরাফাতের (১৫) লাশ উদ্ধার করেছে নোয়াখালীর কবিরহাট থানার পুলিশ। গত ২৬ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ঘোষবাগ গ্রামের গঙ্গার দিঘির পাড়ে আরাফাতকে হত্যার আগে টিকটক করার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়েছিল।
ইয়াছিন আরাফাত উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের উত্তমপুর লামছি গ্রামের মো. শহিদ উল্যাহর ছেলে। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কবিরহাট থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে বাড়ি থেকে বের হয় ইয়াছিন আরাফাত। এরপর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২৮ সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। এরই মধ্যে নজরদারিতে নেওয়া হয় ইয়াছিনের সমবয়সী কিশোর চাচাতো ভাইকে। জিজ্ঞাসাবাদে তার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। গতকাল রোববার রাতে পরিবারের সহায়তায় তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ইয়াছিনের চাচাতো ভাই দেড় মাস আগে চড়-থাপ্পড় মারার জেরে তাকে খুন করার কথা স্বীকার করে।
আটক কিশোর পুলিশকে জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী সে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করে তার আরেক কিশোর বন্ধুর সঙ্গে। ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে টিকটক করার কথা বলে ইয়াছিনকে কবিরহাট পৌরসভার গঙ্গা দিঘির পাড়ে ডেকে নেয় তারা। সেখানে দুই বন্ধু মিলে ইয়াছিনের দুই হাত, দুই পা ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে ইয়াছিনকে দিঘির কচুরিপানার ভেতর মধ্যে ফেলে দেয় তারা। ইয়াছিনের মুঠোফোনটি নিয়ে যায় তার চাচাতো ভাইয়ের বন্ধু। সেটি জব্দ করা হয়েছে।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ আরাফাতের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে সে কাদের সঙ্গে মেলামেশা করত, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু নিহত ও অপরাধীরা সবাই কিশোর হওয়ায় নানা কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়। প্রায় আড়াই-তিন মাস আগে তারা ওই হত্যার পরিকল্পনা করে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক দুই কিশোরকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কিশোর আদালতে পাঠানো হবে।