নানা স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে প্রথমে সেগুলো একটি জায়গায় জড়ো করা হয়। পরে এগুলো কেটে কেটে ভেতরে প্রবেশ করানো হয় খড়। এভাবে তৈরি করা হয় একেকটি পাখির বাসা। এরপর এসব বাসা গাছের ডালে ডালে শক্ত করে বেঁধে দেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁদের দাবি, পাখি শিকার বন্ধ ও প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে জনসচেতনতা বাড়াতেই তাঁরা এমন উদ্যোগের কথা ভেবেছেন।
এই ব্যতিক্রমী কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী। তাঁদের অধিকাংশই উপজেলাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে পাখির বাসা তৈরি করছেন। এরপর উপজেলার বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, বাদশাগঞ্জ ভূমি কার্যালয়, বৌলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৌলাম ও মাটিকাটা গ্রামের আম, জাম, রেইনট্রিসহ বিভিন্ন গাছের ডালে ৫০টি বাসা বেঁধে দেন তাঁরা। এ কার্যক্রমে অংশ নেন বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থী রিফাত জামিল, প্রথম আলো গাজীপুর বন্ধুসভার সদস্য তানভীর হাসান, বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রবিন আহমেদ, সুমন আহমেদ, তাশরিফ মুজাক্কির, ফারহান আহমেদ প্রমুখ।
এ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক রিফাত জামিল বলেন, ‘পাখির শিকার অপরাধ। অথচ আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে অবাধে পাখি শিকার করা হয়। এতে বিলুপ্তি ঘটছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির। ছোটবেলায় পাখির যে কিচিরমিচির শুনতাম, তা এখন হয়ে ওঠে না। পাখি শিকার বন্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে ও প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন। এ বিষয়ে তিনি প্রথম আলোকে জানান, শিক্ষার্থীদের উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। পাখি শিকার বন্ধ ও প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক—এটাই প্রত্যাশা।