জুবায়ের
জুবায়ের

তুচ্ছ ঘটনায় বকাবকি, শিশুকে মেরে বাড়ির অদূরে ফেলে রাখল কিশোর

নরসিংদীর মাধবদীতে নিখোঁজের পরদিন কাপড়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় জুবায়ের (৭) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে মাধবদী থানার ভগীরথপুর এলাকার দুটি বাড়ির মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিশুটির স্বজনদের অভিযোগ, ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরের সঙ্গে শিশুটির মা-বাবার ঝগড়ার জেরে গতকাল শিশুটিকে অপহরণ করা হয়। পরে মুখে কাপড় বেঁধে শ্বাস রোধ করে শিশুটিকে হত্যা করে ওই কিশোর।

নিহত জুবায়ের ভগীরথপুর এলাকার ঝালমুড়ি বিক্রেতা মিরাজ মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। অন্যদিকে অভিযুক্ত কিশোর এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। তার বাবা এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন। কয়েক দিন আগে নারী নির্যাতনের একটি মামলায় জামিন পেয়ে সে বাড়িতে আসে।

নিহত শিশুটির স্বজনেরা জানান, গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে প্রতিবেশী কিশোরের সঙ্গে নিহত জোবায়েরের মানসিক ভারসাম্যহীন মা জ্যোৎস্না বেগমের কথা–কাটাকাটি হয়। এতে শিশুটির বাবা মিরাজ মিয়াও জড়িয়ে পড়েন। তখন দুজন মিলে কিশোরকে বকাবকি করেন। পরে যে যার মতো চলে যান। সন্ধ্যা সাতটা থেকে জোবায়েরকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর তাঁকে না পেয়ে সকালে তাঁরা থানায় যান।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানার উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান। তিনি পুরো ঘটনা শুনে ওই কিশোরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে কিশোরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ বিকেলে বাড়ির অদূরে ফাঁকা জায়গা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই কিশোর পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, গতকালের ঝগড়ার জেরে শিশুটিকে শ্বাস রোধে হত্যা করেছে সে।

উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শিশু হত্যায় অভিযুক্ত কিশোরকে এক সপ্তাহ আগে নারী নির্যাতনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছিলেন। তিন দিন পর সে জামিন পেয়ে বের হয়ে আসে। জামিনে বেরিয়েই তুচ্ছ ঘটনায় শিশুটিকে হত্যা করল।

শিশুটির বাবা মিরাজ মিয়া বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় অল্প বয়সী একটা ছেলে এভাবে তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলবে, ভাবতেও পারছেন না। পুলিশের কাছে সব স্বীকার করে সে (কিশোর)। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবেন। তাঁরা ছেলে হত্যার বিচার চান।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করে থানায় রাখা হয়েছে। শিশুটির লাশ দাফনের পর রাতেই স্বজনেরা মামলা করতে আসবেন বলে জানিয়েছেন। মামলার পর কাল তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।