রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে এক পথশিশুকে (৬) ফুসলিয়ে কুমিল্লায় নিয়ে যান রিনা আক্তার নামের এক নারী। কুমিল্লা নগরের একটি এলাকায় স্বামীসহ ভাড়া থাকেন তিনি। কন্যাশিশুটিকে ওই বাসায় প্রায় এক মাস আটকে রেখে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতেন রিনার স্বামী সুমন মিয়া (৪০)। এ সময়ে শিশুটিকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেও শিশুটির ওপর শারীরিক নির্যাতন করছিলেন ওই দম্পতি। তখন শিশুটির চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন। এরপর ওই দম্পতিকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে এক প্রতিবেশী বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
আজ বুধবার বিকেলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী শিশুটি বর্তমানে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গণপিটুনির শিকার ওই দম্পতিও পুলিশের পাহারায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম ও অমানবিক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে কমলাপুর রেলস্টেশনে চলে যান রিনা বেগম। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওই পথশিশুকে ফুসলিয়ে তিনি কুমিল্লায় নিয়ে আসেন। বাসায় আনার পর স্ত্রী রিনা ঘরের বাইরে গেলেই সুমন বিভিন্ন সময় শিশুটিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এ সময় ওই শিশু কয়েকবার ধর্ষণের শিকার হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি জানতে পেরে সুমন ও রিনাকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন এলাকাবাসী। নির্যাতনে শিশুটির চোখ-মুখ ফুলে গেছে।
ওসি মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সুমনকে গণপিটুনি দিলে তিনি ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। সুমন ছিলেন রিকশাচালক আর তাঁর স্ত্রী রিনা ছিলেন টোকাই। রিনা তাঁর ছোট মেয়েকে নিয়ে বাইরে গেলেই সুমন পথশিশু মেয়েটির ওপর নির্যাতন করতেন। শিশুটি ধর্ষণের কথা যাতে কাউকে না বলে, সে জন্য প্রতিনিয়ত নির্যাতন করা হতো। তিনি বলেন, প্রতিবেশীর করা মামলায় ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গণপিটুনিতে আহত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।