বিএনপি
বিএনপি

কসবা-আখাউড়ায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৮ নেতাকে বহিষ্কার, ১০ জনকে শোকজ

তিন দিনের ব্যবধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, আখাউড়া উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের আট নেতাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে  বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও ১০ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ২৩ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা ও উপজেলা বিএনপির পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন কসবা উপজেলা বিএনপির বর্তমান সদস্য এবং সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মেহাম্মদ ইলিয়াস, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সদস্য আশরাফ আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য মোহাম্মদ আলমগীর, বায়েক ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, ছিদ্দিকুর রহমান ও সদস্য নাদিরুজ্জামান ভূঁইয়া, কসবা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আফতাব উদ্দিন এবং আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফিরোজ ভূঁইয়া।

গত মঙ্গলবার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান এবং সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কসবা পৌর বিএনপির তিন নেতা, একই দিন কসবা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন আহমেদ খান এবং সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক স্বাক্ষরিত পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা বিএনপির আরও তিন নেতা, গত বুধবার আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন এবং সদস্যসচিব খোরশেদ আলম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত আরেক চিঠিতে ফিরোজ এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের এক চিঠিতে আফতাবকে বহিস্কার করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের ১০ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

বহিষ্কার হওয়া নেতা–কর্মীরা বলছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমানের জনসভা ও ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকিদের কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির কোনো কমিটিতে পদে না থাকা কবির আহমেদ ভূঁইয়ার নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান ২১ সেপ্টেম্বর আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় জনসভার পাশাপাশি বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। কবির আহমেদ ভূঁইয়ার অনুসারীদের বাধা উপেক্ষা করে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সকালে আখাউড়া এবং বিকেলে কসবা উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

তবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের কারণ হিসেবে মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং নীতি ও আদর্শপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা, দলীয় কোন্দল, বিভাজন, জেলা বিএনপির ঢাকা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সেমিনারে উপস্থিত না হওয়া, জমি দখলে মদদ দেওয়া, আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।

বহিষ্কার হওয়া কসবা উপজেলা বিএনপির নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, জেলা ও উপজেলা বিএনপির কোনো কমিটিতে কবির আহমেদ ভূঁইয়ার কোনো পদ নেই। মুশফিকুর রহমানের জনসভায় যোগ দেওয়ায় কবিরের নির্দেশে বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাদের বহিষ্কারসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এগুলো বিধিবর্হিভূত।

তবে কসবা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠনপরিপন্থী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন সময় দলীয় সভায় যোগদান না করায় এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে মুশফিকুর রহমানের জনসভার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, সাংগঠনিক বিধি লঙ্ঘনসহ সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।