রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে চলমান বাস ধর্মঘটের মধ্যে এবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা ও থ্রি–হুইলার যানবাহনেরও ধর্মঘট ডেকেছে রাজশাহী জেলা মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতি। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। দ্বিগুণ ভাড়াতেও মিলছে না কোনো গাড়ি। কোনো উপায়ে গাড়ির ব্যবস্থা করা গেলেও পথে পথে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. আলম বলেন, ‘রাজশাহীতে এসেছি একজন রোগীকে নিয়ে। পথে পথে তাঁকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পড়তে হয়েছে। এমন প্রশ্নও করেছে, কেন গাড়ি নিয়ে বের করেছি। এখন তো গাড়ি বের করাই যাবে না।’
রাজশাহী নগরের রেলগেট এলাকা থেকে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক। এখান থেকে রাজশাহী জেলার কয়েকটি উপজেলাসহ নওগাঁয় মানুষ যাওয়া-আসা করে। রেলগেট এলাকায় সিএনজিস্ট্যান্ড। ধর্মঘটের খবরে দুপুর পর থেকেই এখানে সিএনজির সংখ্যা কমতে থাকে।
একই পরিস্থিতি নগরের অন্যান্য জায়গায়ও। বেলা আড়াইটার দিকে তালাইমারী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিনটি সিএনজি দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে দুটি মুহূর্তেই ভর্তি হয়ে যায়। অন্তত ২০ জনের মতো যাত্রী গাড়ির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। এদের কেউ রাজশাহীর তানোর, কেশরহাট, মান্দা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা। সবাই শহরে এসেছিলেন জরুরি কাজ করতে।
মান্দায় যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন আবদুল মালেক। তিনি তাঁর মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন রাজশাহী শহরে। এখানে এসে আটকে গেছেন। মালেক বলেন, ‘এভাবে ধর্মঘট লাগিয়ে সরকার টিকে থাকতে পারবে না। মানুষের ভোগান্তি হয়েছে, এটা সরকারকে বোঝা দরকার। এই ধর্মঘটে বিএনপির লাভ।’
মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির গণসমাবেশ উপলক্ষে তারা ধর্মঘট ডাকেনি। দুই দফা দাবিতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তাদের দাবি হলো, মহাসড়কে অবাধে চলাচল এবং বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্তি সহজ ও হয়রানিমুক্ত করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবে বলে জানা গেছে।
মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতির সহসভাপতি আহসান হাবিব বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দুই দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়কসহ কোনো রাস্তায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা ও থ্রি-হুইলার চলবে না। মহাসড়কে চলতে গেলে বাস মালিক সমিতি তাঁদের নানা ধরনের বাধা দিচ্ছে। গত কয়েক দিনে তা বেড়েছে।