জমিসহ ঘর পাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত কাভার্ড ভ্যানের সহকারী রাসেল মিয়ার (১৯) পরিবার। ওই পরিবারকে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বারহাট্টার শাসনউড়া মৌজায় ১০ শতক সরকারি জমিতে একটি আধা পাকা ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। এ উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে তাঁর মা কুলসুমা আক্তারের হাতে জমির দলিল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ঘর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
ঘর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন, জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার, নিহত রাসেলের মা কুলসুমা আক্তার, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদর উপজেলার সদস্য ফাহিম পাঠান প্রমুখ।
রাসেল মিয়া বারহাট্টার বাউসী ইউনিয়নের সুসং ডহরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ওই গ্রামের মো. মুন্সী মিয়া ও কুলসুমা দম্পতির তৃতীয় সন্তান। গাজীপুরের মাওনায় মোরগবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান গাড়িতে সহকারী ছিলেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন রাসেল পরিবারের অভাব দূর করতে কিশোর বয়স থেকেই কাজে যোগ দেন। তাঁর আয়েই চলত চার সদস্যের পরিবার। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট গুলিতে নিহত হন তিনি। নিজেদের ভিটেমাটি না থাকায়, রাসেলের লাশ দাফন করা হয় তাঁর চাচার জমিতে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে রাসেলের পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে প্রশাসন। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া আজ বিকেলে ১০ শতক জমিসহ প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় কমিশনারের তহবিল থেকে নগদ এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
কুলসুমা আক্তার বলেন, তাঁর ছেলে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, এটা গর্বের। যাঁরা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তাঁদের যেন শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়। তাঁর আরেক ছেলে আছেন, তাঁকে যেন কর্মের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় প্রশাসনের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, আন্দোলনে নিহত রাসেলের পরিবারের দুরবস্থার বিষয়টি জেনে তাঁর পরিবারের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনারের পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকাসহ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে।