সই জালিয়াতির দায়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কারাগারে

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম

২ কোটি ৫ লাখ টাকার ব্যাংকঋণ মওকুফে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টার সই জালের মামলায় দণ্ডিত কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে (রেনু) কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৮-এ আত্মসমর্পণ করলে বিচারক আরাফাতুল রাকিব তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত ১৮ জানুয়ারি সাজা পরোয়ানাটি কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয় গ্রহণ করলেও বিষয়টি জানা যায়নি। গত সোমবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ৪ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৮ সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করেন। রফিকুল ইসলাম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিটেডের কাছে ঋণের ২ কোটি ৫ লাখ টাকা পায় উত্তরা ব্যাংক। পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওই ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার কথা বলে কোম্পানিটির কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমানের সই জাল করে ঋণ মওকুফের ব্যবস্থা নিতে উত্তরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করেন। চিঠিতে ‘ড. মসিউর রহমান’–এর জায়গায় ‘ডা. মশিউর রহমান’ লেখায় উত্তরা ব্যাংকের এমডির সন্দেহ হয়। তিনি চিঠিটি যাচাইয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠান। সেখানে প্রমাণিত হয়, এমন কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি।

এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকার বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় একই কর্মকর্তা ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিডেট পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন, চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন, পরিচালক আমজাদ হোসেন ও মনোয়ার হোসেন। ২০১৫ সালের ১১ জুন মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে অপর আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পরে আদালত এই মামলায় রফিকুল ইসলামকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনা শ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।