রাজবাড়ী সদর উপজেলায় পরকীয়ার অভিযোগ এনে দুই ইউপি সদস্যকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় যুবদল নেতা রায়হান খানসহ পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মামলাটি করেন নির্যাতনের শিকার নারী ইউপি সদস্য।
রায়হান খান উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ঘটনায় রায়হান খানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা যুবদল। গতকাল শনিবার রাতে সংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নির্যাতনের শিকার ইউপি সদস্য ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পরকীয়ার অভিযোগ এনে দুই ইউপি সদস্যকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে আনেন যুবদল নেতা রায়হান খান ও তাঁর লোকজন। স্থানীয় মহারাজপুর ব্রিজসংলগ্ন একটি দোকানে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাঁদের নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ৫ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কাঠের লাঠি দিয়ে দুজন ইউপি সদস্যকে মারধর করছেন রায়হান। তাঁর সঙ্গে আরও দুই যুবক মারধরে অংশ নেন। মারধরের পাশাপাশি তাঁদের লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে ওই নারী সদস্যের গলা থেকে সোনার চেইন ও পায়ের নূপুর খুলে নেন রায়হান। আরেক যুবক লাঠি হাতে তেড়ে এসে গালাগালি করে আবারও তাঁদের মারধর করতে থাকেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান আজ রোববার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, নির্যাতনের শিকার ওই নারী ইউপি সদস্য গতকাল দুপুরে লিখিত অভিযোগ দেন। তবে সেটি ত্রুটিপূর্ণ থাকায় সংশোধন করে সন্ধ্যায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। যুবদল নেতা রায়হান খানসহ পাঁচজনকে চিহ্নিত এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ গতকাল রাতেও অভিযান চালিয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে দুই ইউপি সদস্যকে নির্যাতনের অভিযোগে বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান খানকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে রাজবাড়ী সদর উপজেলা যুবদল। গতকাল শনিবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন ও সদস্যসচিব মামুনুল রনি স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান খানকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাদের অপকর্মের কোনো দায় দল নেবে না। সেই সঙ্গে বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের সব পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতেও বলা হয়েছে।