হরিণ
হরিণ

সুন্দরবনে হরিণের মাংস কাটার সময় নৌবাহিনীর অভিযান, ১ চোরা শিকারি গ্রেপ্তার

সুন্দরবনের গহিনে অবৈধভাবে শিকার করা হরিণের ২টি মাথা, ৮টি পা, ৪৫ কেজি মাংসসহ ইয়াকুব আলী (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে খুলনার কয়রা উপজেলায় দায়িত্বরত নৌবাহিনী ও কয়রা থানা-পুলিশ। আজ রোববার বিকেলে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুন্দরবনসংলগ্ন ৪ নম্বর কয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে ইয়াকুব আলীকে আটক করা হয়। এ সময় সেখানে থাকা সাতজন শিকারি পালিয়ে যান।

নৌবাহিনীর কনটিনজেন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফয়সাল আল ইমরান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন, সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে কয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের ঝোপের মধ্যে মাংস কেটে টুকরা করছেন। এরপর তাঁরা অভিযানে নেমে সেখানে থেকে দুটি হরিণের অঙ্গপ্রত্যঙ্গসহ ইয়াকুব আলী ওরফে সানা নামের এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করেন। বাকি শিকারিরা পালিয়ে যান। পরবর্তী সময় আসামি ও হরিণের মাংস কয়রা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কয়রা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইব্রাহিম শেখ বলেন, ‘নৌবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে হরিণের মাংসসহ শিকারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পালিয়ে যাওয়া আসামিদের নাম প্রকাশ করেন তিনি। আমরা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত সাতজন আসামি ও দুই থেকে তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করে মাংস বিভিন্ন স্থানে পাচার করতেন বলে নিশ্চিত হয়েছি।’

গ্রেপ্তার ইয়াকুব আলীসহ মামলার এজাহারে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের মো. আবুল হাসান (৩০), মো. সিদ্দিক সানা (৩২), মো. ওলি মোড়ল (৩৮), মো. বাচ্চু গাজী (৩৩), আক্তার সানা (৩৭) ও ৫ নম্বর কয়রা গ্রামের মো. হাফিজ গাজী (২৮)।

আজ বিকেলে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আদালত ভবনের পেছনে গর্ত খুঁড়ছেন এক ব্যক্তি। পাশেই একটি বস্তায় হরিণের মাংস রাখা। তিনি জানান, হরিণের মাংসগুলো এই গর্তে পুঁতে ফেলা হবে। কিছুক্ষণ পর পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গর্তের মধ্যে ফেলা হয় হরিণের মাংসগুলো।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়রা উপজেলায় লোকালয়ের পাশে ছোট একটি নদী পেরোলেই গহিন জঙ্গল। পেশাদার শিকারিরা গোপনে বনে ঢুকে হরিণের যাতায়াতের পথে নাইলনের দড়ির একধরনের ফাঁদ পেতে রাখেন। চলাচলের সময় হরিণ সেই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণ জবাই করে মাংস বিক্রি করেন তাঁরা।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশে হরিণের মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। হরিণ নিধনে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত।