ভোলা সরকারি কলেজে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কোটাবিরোধী মিছিল ও বিক্ষোভের কর্মসূচি ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। এ ছাড়া দুজন শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। এতে কোটাবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে জমায়েত হচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জমায়েত থেকে ছাত্রলীগের নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন, আবুল কাশেমসহ দুই-তিনজনকে ধরে নিয়ে যান। ওই শিক্ষার্থীরা একটি রক্তদান সংগঠনে কাজ করেন। দুই ঘণ্টার মতো তাঁদের আটকে রেখে মারধর করে ছেড়ে দেন। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে জমায়েতে ধাওয়া দেন। এতে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
আন্দোলন আহ্বানকারীদের একজন আরিফ আহমেদ বলেন, তাঁরা চান মেধার ভিত্তিতে সবার চাকরি হোক। ঢাকা-চট্টগ্রামের কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে তাঁরাও একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলনের ডাক দেন। কলেজের সামনে এ কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল। সব শিক্ষার্থী যখন কলেজের সামনে জমায়েত হন, তখন ছাত্রলীগের নেতারা কয়েকজনকে সন্দেহজনকভাবে ধরে নিয়ে যান। তাঁদের দুই ঘণ্টা আটকে রেখে মারধর করেন। পরে ছেড়ে দেন। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ ধাওয়া করে আন্দোলন কর্মসূচি পণ্ড করে দেয়।
ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী আরমান আহসান বলেন, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কলেজের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেন। পরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে আহ্বানকারীদের ডেকে তিনি বলেন, এখানে এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। সাধারণ পরীক্ষার্থীদের যেন কোনো ব্যাঘাত না হয়। আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কোনো হামলা হয়নি।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিব মাহমুদ বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলন একটি যৌক্তিক দাবি। এ আন্দোলনে সকলের অংশ নেওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু এটা তা ছিল না, এটা ছিল ছাত্রশিবিরের কমিটি গঠন।...তাদের (আন্দোলনকারীদের) ধরে জিজ্ঞাসা করলাম, কাকে জিজ্ঞেস করে এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছ? আন্দোলন হলে আমাদের আহ্বানে হবে। আর এখন চলে এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় কলেজের সামনে কিসের আন্দোলন? একটা কিছু হয়ে গেলে কে এর দায় নেবে? পরে সবাই চলে গেছে। আর কিছু নয়।’
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ভোলা সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা একটি কোটাবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু বিক্ষোভ, আন্দোলন অবস্থান কর্মসূচি কিছু হয়নি। পরে পুলিশ চলে আসে। কোনো হামলার খবর পাননি।