আবদুল হালিম
আবদুল হালিম

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক গ্রেপ্তার

গাজীপুরে কারখানার শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে জননিরাপত্তায় হুমকি ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আবদুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় তাঁকে সোপর্দ করে সেনাবাহিনী।

এ সম্পর্কে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল হালিমের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলায় গতকাল বিকেলে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল হালিম (৫০) চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার আবদুস সাত্তারের ছেলে। তিনি টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের পরিচালক। গাজীপুর নগরের মোগরখাল এলাকায় ওই গ্রুপের টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের কারখানা অবস্থিত।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে বাসন থানা ও গাজীপুর সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে আবদুল হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর বিরুদ্ধে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা টাকা আত্মসাৎ ও শ্রমিকদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর একটি দল আবদুল হালিমকে চট্টগ্রামের বাসা থেকে আটক করে। পরে তাঁকে গাজীপুরের সেনা ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে গতকাল দুপুরে আবদুল হালিমকে বাসন থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

আবদুল হালিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় শ্রমিকদের বেতনের টাকা না দিয়ে ৬৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা অপর একটি মামলার বাদী পুলিশ। অপর মামলায় শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ ও কারখানা ভাংচুরের উসকানি দিয়ে জানমাল ও সম্পদের ক্ষতি সাধন, জননিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।

গাজীপুর নগরের মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গত শনিবার সকাল থেকে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা কয়েকটি কারখানা ভাঙচুর করেন। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটিসহ আশপাশের অর্ধশত কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব নিলে শ্রমিকেরা তিন দিন পর অবরোধ প্রত্যাহার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আশপাশের অন্য কারখানাগুলো চালু হয়েছে। তবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যাসহ নানা কারণে টিএনজেড গ্রুপের কারখানাগুলো এখনো চালু হয়নি।