নওগাঁর মান্দা উপজেলার লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর ও মদকচক এলাকায় আত্রাই নদ থেকে নিয়মবহির্ভূত বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বানডুবি হাজি ইসমাইল হোসেন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, মান্দায় আত্রাই নদীর উজান অংশের (ভালাইন থেকে ফেরিঘাট সেতু পর্যন্ত) ইজারা নিয়েছেন রহমত উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। কাগজে-কলমে রহমত উল্লাহ এককভাবে বালুমহালের ইজারাদার হলেও মোয়াজ্জেম হাজি, মেহেদী হাসানসহ আরও ঠিকাদার আত্রাই নদের উজান অংশের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করে থাকেন। ইজারা চুক্তিতে ১২টি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলনের কথা উল্লেখ রয়েছে। চুক্তিতে উল্লেখ না থাকলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে উপজেলার আয়াপুর, মদনচক ও লক্ষ্মীরামপুর এলাকা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এসব স্থানে ভারী খনন যন্ত্র (ড্রেজার মেশিন) দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত চারটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় নদীর পশ্চিম ও পূর্ব তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এতে বসতবাড়ির পাশাপাশি নদীতীরবর্তী ফসলি জমি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বক্তব্য দেন মদনচক গ্রামের বাসিন্দা ফজলুর রহমান, আজিজুল হক, আব্দুল মান্নান, মোস্তাফিজুর রহমান, আতাউর রহমান, আলমগীর হোসেন, লক্ষ্মীরামপুর গ্রামের রনজিৎ কুমার, সোহাগ হোসেন, মমিন রাব্বী প্রমুখ। বক্তারা বলেন, প্রভাবশালী ইজারাদারের লোকজন নিয়মবহির্ভূতভাবে আত্রাই নদীর মদনচক, লক্ষীরামপুর ও আয়াপুর মৌজায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীতীরবর্তী হাটবাজার, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শিগগিরই বালু তোলা বন্ধ করা না হলে আগামী বর্ষায় নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ করার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে বালুমহালের ইজারাদার রহমত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়ম মেনেই উপজেলার মদনচক, লক্ষ্মীরামপুর ও আয়াপুর এলাকা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। আমি ইজারা নেওয়ার অনেক আগে থেকেই ওই সব জায়গা থেকে বালু তোলা হতো। চুক্তিতে যে কয়টি স্থান থেকে বালু তোলার কথা উল্লেখ আছে, সেখানে ওই তিনটা জায়গার নামও আছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে না। ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতি করার জন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ্ আলম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মান্দায় ইউএনও হিসেবে সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি এখনো আমার নলেজে আসেনি। হয়তো আগে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে কোনো ব্যত্যয় থাকলে অবশ্যই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’