রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় শ্রমিক লীগের এক নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০।
গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামের শাহাদাত মণ্ডল (৬৫) এবং তাঁর দুই ছেলে রাফি মণ্ডল (৩২) ও মেহেদী হাসান (৩০)। তাঁদের গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০–এর কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার।
নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল আজিজ মহাজন (৪৫)। তিনি নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামের আজের আলী মণ্ডলের ছেলে ও নারুয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি ভূমিহীনদের পক্ষে আন্দোলন করতেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আবদুর রহমান মহাজন বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৮-৯ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গতকাল দুপুরে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা করেন।
স্বজন, পুলিশ, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গড়াই নদ। নদের চর নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে। এ ঘটনায় মামলা চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে আবদুল আজিজ মহাজন ও চাষি আমজাদ। অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন শাহাদত হোসেন মাস্টার ও রেজাউল ইসলাম। আবদুল আজিজ গত রোববার রাতে পাশের মরাবিলা গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে মোহন নামের এক ব্যক্তি ছিলেন। রাত আটটার দিকে কোনাগ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে ইলিয়াসের দোকানের পাশে পৌঁছালে বাঁশ দিয়ে তাঁর গতিরোধ করে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। মাটিতে পড়ে গেলে আবদুল আজিজকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে আজিজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, আবদুল আজিজ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে এটি কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়। চর ও জমিজমা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে আবদুল আজিজের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
র্যাব-১০–এর কোম্পানি অধিনায়ক কে এম শাইখ আকতার বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি।’