কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে আজ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে
কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে আজ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে

কোটা বাতিলের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ, চতুর্থ দিনের মতো মহাসড়ক অবরোধ

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। একই দাবিতে গতকাল বুধবারও পৌনে দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া সোমবার ১০ মিনিট ও মঙ্গলবার ২০ মিনিট সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

আজ দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো ২০১৮–এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে; সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

গতকাল দুপুর পৌনে একটায় সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় গো প্রজনন কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকে রয়েছে। যাত্রীদের কেউ কেউ বসে বাসে আছেন। অনেকে হেঁটে চলে যাচ্ছেন।

মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্ট কোটা নিয়ে শুনানির পূর্বঘোষিত তারিখ পিছিয়েছেন। আমরা এখনো বিশ্বাস করি, এই অন্যায্য কোটা বাতিল হবে এবং রায় আমাদের পক্ষে যাবে। তাই আমরা এই মুহূর্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচির দিকে যাচ্ছি না। জনভোগান্তি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে রেখেছি। আমাদের আন্দোলন জারি রাখার জন্য আজকের এই অবরোধ কর্মসূচি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ বলেন, ‘আজ কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের শুনানি ছিল; সেটা পেছানো হয়েছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি সময়ক্ষেপণ করে আন্দোলন বানচাল করা যাবে না। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’