বগুড়ায় জামায়াত কর্মী মিজানুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পর মামলা করা হয়েছে। নিহত মিজানুরের বন্ধু মোছাদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন।
এতে আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম (মোহন) ও আল রাজী (জুয়েল), সাবেক কাউন্সিলর ইব্রাহিম হোসেনসহ ৪৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মুঈনুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৩ সালে জামায়াত কর্মী মিজানুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল রাতে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত মিজানুর রহমান কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সরকারবাড়ী গ্রামের আবু কালাম সরকারের ছেলে। তিনি বগুড়ায় মুরগির হ্যাচারিতে কাজ করতেন এবং পৌরসভার সাবগ্রাম মাস্টারপাড়ায় থাকতেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন; দপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল রাজী জুয়েল; বগুড়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শহর কমিটির সাবেক আহবায়ক ইব্রাহিম হোসেন; জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাশরাফী হিরো; জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুভাশীষ পোদ্দার (লিটন); জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম; জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক (তিতাস) প্রমুখ।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আনুমানিক বেলা পৌনে একটার দিকে বগুড়া শহরের সাবগ্রাম কমান্ড প্লাজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মিজানুর রহমান। এ সময় আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিজানুরকে ঘিরে ধরেন। ১ নম্বর আসামি আল রাজি জুয়েলের হুকুমে ৫ নম্বর আসামি সম্পদ পশারী হত্যার উদ্দেশ্যে বার্মিজ চাকু দিয়ে মিজানুরের পেটে আঘাত করেন। পরে ৬ নম্বর আসামি সঞ্জু সরকার হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। অন্য আসামিরা লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে তাঁরা জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।’
এজাহারে আরও বলা হয়, লাশ দাফনের পর বগুড়া সদর থানায় মামলা দিতে গেলে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মামলা না করার জন্য হুমকি দেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থানায় মামলা করা হয়েছে।