পালঙ্কজুড়ে দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। শয্যার আয়তন ৪২ বর্গফুট। পালঙ্কে বসে দেখার জন্য পায়ের দিকের উপরিভাগে আছে একটি ৩২ ইঞ্চি টেলিভিশন। ওপরে চারপাশে রয়েছে চারটি ছোট আকৃতির বৈদ্যুতিক পাখা ও নয়টি বৈদ্যুতিক বাল্ব। খাটে ওঠার জন্য আছে কাঠের সিঁড়ি। চারপাশে বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশের নানা শৈল্পিক চিত্রকর্ম।
মাগুরা শহরের নতুন বাজার ছানার বটতলায় আয়োজিত ফার্নিচার মেলায় শোভা পাচ্ছে এ ধরনের দুটি পালঙ্ক। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের কাঠমিস্ত্রি ইয়াছিন শেখ মেলায় পালঙ্ক দুটি নিয়ে এসেছেন। পালঙ্ক দুটির নাম দিয়েছেন ‘রাজপঙ্খি’ ও ‘ময়ূরপঙ্খি’। পালঙ্ক প্রতি দাম চাইছেন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা।
প্রতিবছর দুর্গাপূজার এক মাস পর মাগুরায় উদ্যাপিত হয় কাত্যায়নী পূজা। এই পূজা উপলক্ষে শহরের ছানার বটতলায় বসে মাসব্যাপী ফার্নিচার মেলা। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলার ফার্নিচার ব্যবসায়ীরা এখানে খাট, পালঙ্ক, সোফা, শোকেস, ড্রেসিং টেবিল নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। বিক্রি হয় সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকার পণ্য। এ বছর মেলার অন্যতম আকর্ষণ এই পালঙ্ক দুটি।
গতকাল মঙ্গলবার মেলায় বসে কথা হয় পালঙ্ক দুটির মালিক ইয়াছিন শেখের সঙ্গে। তিনি জানান, সম্পূর্ণ কাঁঠাল কাঠের তৈরি এই পালঙ্ক দুটি তিনি শখের বশেই তৈরি করেছেন। কাঠ লেগেছে ৫০ ঘনফুট। গড় মজুরি, মেলায় আনা-নেওয়া, থাকা-খাওয়ার খরচ ও অন্যান্য উপকরণ খরচ মিলিয়ে পালঙ্কপ্রতি তাঁর গড় খরচ চার লাখ টাকা। পালঙ্ক দুটি তৈরি করতে তাঁর সময় লেগেছে প্রায় এক বছর। পালঙ্কগুলোকে আকর্ষণীয় করতে লাগানো হয়েছে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন, ৪টি ফ্যান, ৯টি বাল্ব ও ১টি করে কাঠের সিঁড়ি।
ইয়াছিন শেখ জানান, প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা পালঙ্ক দুটি দেখতে আসছেন। এ পর্যন্ত একটি পালঙ্কের দাম উঠেছে তিন লাখ টাকা। অন্তত সাড়ে চার লাখ টাকা দাম পেলে একটি পালঙ্ক বিক্রি করবেন বলেও জানালেন তিনি।
মেলা কমিটির সদস্য বিধান সাহা ও আনন্দ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছর কাত্যায়নী পূজা উপলক্ষে ছানার বটতলায় মাসব্যাপী এই ফার্নিচার মেলা চলে। মেলায় কেনাকাটা করতে আসে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এবারের মেলার অন্যতম আকর্ষণ এই পালঙ্ক দুটি। নভেম্বরের ২ তারিখে শুরু হওয়া মেলা চলবে মাসজুড়ে।