'ভোটের সময় মায়াকান্না, ভোট ফুরালে লাপাত্তা'

ভোট
ভোট

রংপুর নগরের রাস্তা সংস্কার, পয়োনিষ্কাশনের নালা নির্মাণ ও সড়কবাতি চান ভোটাররা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নসহ আরও নানা দাবি তাঁদের। তাঁদের ভাষ্য, ভোটের সময় প্রার্থীরা মায়াকান্না করেন। ভোট ফুরালে লাপাত্তা হন।

আগামী ৫ অক্টোবর রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচন সামনে রেখে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এসব দাবির কথা জানা গেছে।

ভোটাররা বলেন, এসব দাবি নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলন হয়েছে। হয়েছে মানববন্ধন ও সমাবেশ। কিন্তু দাবি পূরণে সাংসদের উদ্যোগ খুব কম।

রংপুর-৩ আসন সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই আসনে ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২। ৫ অক্টোবর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেওয়া হবে।

গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার কেরানীপাড়া, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, নজিরের হাট এলাকায় গেলে আসন্ন উপনির্বাচনে নানা দাবির কথা জানান বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।

সদর উপজেলার পালিচড়া এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান নগরে অটোরিকশা চালান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাস্তায় ছোট–বড় অনেক গর্ত। দিনের বেলা দেখে দেখে চলাচল করা গেলেও রাস্তায় বাতি কম থাকায় রাতে চলাচল করা খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে।’

কেরানীপাড়া এলাকায় পয়োনিষ্কাশনের নালাগুলো ভরাট হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে পানি উপচে পড়ে। এতে হেঁটে চলাচল করা যায় না। এ ছাড়া পানিতে দুর্গন্ধ। এ এলাকার জনগণ বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে এলেও আগের সাংসদ তা পূরণে উদ্যোগ নেননি বলে জানান ভোটাররা। এখানকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের ভোটে এমপি (সাংসদ) নির্বাচিত হন। ভোটের সময় প্রার্থীরা মায়াকান্না করেন। কিন্তু ভোট ফুরালে লাপাত্তা হন। তখন যে, আর সেই। এবার এসব সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি চাই।’

সদর উপজেলার অনেক এলাকার রাস্তা বেহাল। এবড়োখেবড়ো, খানাখন্দ। এসব সড়কে রিকশা, অটোরিকশাসহ যেকোনো ধরনের যানবাহন চালানো কষ্টকর। এবারের উপনির্বাচনে প্রার্থীদের কাছে এসব সমস্যার সমাধান চান অটোরিকশাচালক রুহুল আমিন।

রংপুরসহ আশপাশের মানুষের সরকারি চিকিৎসা পাওয়ার বড় ভরসা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই হাসপাতালের সভাপতি পদাধিকারবলে স্থানীয় সাংসদ। তাই অনেক ভোটারের দাবি, অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসাসেবা যেন নিশ্চিত হয়।

সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামপুরা এলাকার বাসিন্দা সোহেল রহমান বলেন, ‘এক দিন হাসপাতালোত রক্ত পরীক্ষার জন্য যায়া ফেরত আসছি, হাসপাতালোত হয় নাই। বাইরোত থাকি করা লাগছে। হামার এমপি যদি কোনো ভূমিকা না রাখে তাইলে হামার এমপি করিয়া কী লাভ হইল।’

নজিরের হাট এলাকায় কেনাকাটা করতে আসা বিন্যাটারী এলাকার বাসিন্দা নিপুণ রায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানান।

জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ বলেন, ‘এর আগে এ আসনের এমপি ছিলেন বাবা (এরশাদ)। বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার ইচ্ছে আছে। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে অবশ্যই এসব দাবি পূরণে চেষ্টা করব।’

বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান বলেন, ‘বিএনপি জয়ী হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকব।’