তেজগাঁওয়ে গতকাল শুক্রবার ভোরে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত হয়েছেন। র্যাব বলছে, এঁরা আন্তজেলা গাড়িচোর ও ডাকাত দলের সদস্য। মাদারীপুর, টঙ্গী ও রায়েরবাজার থেকে চুরি যাওয়া চারটি গাড়ির সন্ধান করতে গিয়ে এঁদের খোঁজ পাওয়া যায়।
নিহত ওই দুই ব্যক্তি হলেন মো. নাঈম হোসাইন (৩৫) ও মো. জামাল হোসেন (৩৬)।
‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় র্যাব–২–এর কোম্পানি এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী আহত হন। নিহত দুই ব্যক্তির ছোড়া গুলির স্প্লিন্টার তাঁর বাঁ গালে লাগে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মহিউদ্দিন ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, মাদারীপুর ও টঙ্গী থেকে গাড়ি চুরির পর বিকাশে মালিকদের কাছে টাকা চাচ্ছিল গাড়িচোর চক্রের সদস্যরা। টঙ্গীর ভুক্তভোগীরা ৭৫ হাজার টাকাও দেন তাদের। কিন্তু গাড়িচোরেরা মালিককে শ্রীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় সারা রাত ঘুরিয়ে গাড়ি না দিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর মাদারীপুরের ভুক্তভোগীরা তাদের একটি গাড়ি কাকতালীয়ভাবে গাজীপুর থেকে পেয়ে যান। এর মধ্যে রায়েরবাজার থেকে গত ২১ মার্চ একটি গাড়ি চুরির অভিযোগ তাঁদের কাছে আসে। সেখানেও চোরেরা তাদের কাছে বিকাশে টাকা চায়। এই বিকাশ নম্বর এবং আগের বিকাশ নম্বর একই।
মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, এই সব কটি গাড়ি একটি চক্রই চুরি করছে, এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি নিজে বিকাশ নম্বরটির সঙ্গে ভুক্তভোগী সেজে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে বলা হয়, গাড়ি ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে তাদের দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু গাড়ি ফেরত দেওয়ার স্থানের ক্ষেত্রে তিনি তাদেরকে যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গীর কোনো একটি জায়গার বিষয়টি শর্ত হিসেবে জুড়ে দেন।
র্যাবের এই কোম্পানি কমান্ডার বলেন, শুক্রবার ভোররাতে গাড়িচোরেরা যাত্রাবাড়ী থেকে রওনা দিয়েছে—এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পর হাইকোর্ট, সাতরাস্তার লেভেল ক্রসিং ওভারব্রিজ থেকে বিজি প্রেস পর্যন্ত এবং উত্তরার আবদুল্লাহপুরে তিনি তিনটি তল্লাশিচৌকি বসান। হাইকোর্টের প্রথম তল্লাশিচৌকিটি তাদের ধরতে ব্যর্থ হয়। সেখান থেকে জানানো হয়, একটি কাভার্ড ভ্যান খুব দ্রুত যাচ্ছিল কিন্তু সিগন্যাল দেওয়ার পরও থামেনি। তখন বিজি প্রেস এলাকার ব্যারিকেডটি তিনি এমনভাবে করেন, যাতে দ্রুত বেগে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ তারা না পায়। এ কারণে এই ব্যারিকেডে এসে গাড়ি থামাতে না–থামাতেই তারা গুলি করে শুরু করে। র্যাব সদস্যরাও তখন পাল্টা গুলি ছুড়লে গাড়ির ভেতরেই ওই দুজন মারা যায়।