বয়সের ভারে ন্যুব্জ জমিলা খাতুন। শরীরের গঠনও জীর্ণশীর্ণ। কাছ থেকে দেখলেই বোঝা যায়, রোগ–শোকে অনেকটাই ক্লান্ত তিনি। বয়স হয়েছে ৯২ বছর। হতদরিদ্র বিধবা এই নারী শেষ জীবনে একটু সচ্ছলতার আশায় ধরনা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। চেয়েছেন একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড। আশ্বাস মিললেও এখনো জোটেনি কোনো কার্ড।
এ অবস্থায় হতদরিদ্র ওই নারীকে খেয়ে না–খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। জমিলার বাড়ি সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হলিদাকান্দা গ্রামে।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রে জমিলার জন্মতারিখ লেখা রয়েছে ১৯২৭ সালের ৫ জানুয়ারি। সে হিসাবে বয়স ৯২ বছর পেরিয়েছে। স্বামী হক্কু মিয়া মারা গেছেন প্রায় ২০ বছর আগে। সহায়–সম্পদ বলতে ছিল বাড়ির ভিটেটুকু। সেটিও অন্যের কাছে বিক্রি করে গেছেন হক্কু মিয়া। সংসারজীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলের মা হন জমিলা। তবে এক মেয়ে ও ছেলে মারা গেছেন। এখন তিনি বড় মেয়ে খোদেজা খাতুনের বাড়িতে থাকেন।
খোদেজা বলেন, ‘আমার পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। স্বামী মারা গেছে সাত বছর আগে। অহন দুই ছেলে ও এক মেয়ে ঘরে আছে। ধারদেনা কইর্যা খুউব কষ্টে চলতাছি। এর মধ্যে অসুস্থ বৃদ্ধা মারে ওষুধ কিইন্যা খাওয়ানি লাগে। চেয়ারম্যান-মেম্বাররার কাছে বয়স্ক ভাতার কার্ডের লাইগ্যা কত্তবার গেছি, তার কুনু হিসাব নাই। বেহেই খালি কথা দিছে, কেউ কথা রাহে নাই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, তাঁর ওয়ার্ডে বয়স্ক ভাতার যোগ্য নারী–পুরুষ রয়েছেন ১০০–১৫০ জন। সেই তুলনায় বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে খুবই কম।
ধরমপাশা সদর ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ বলেন, এ ধরনের কোনো বয়স্ক নারী ভাতার জন্য এসেছেন বলে তাঁর মনে পড়ছে না।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৯২ বছর বয়সেও হতদরিদ্র ওই বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ওই নারী যাতে বয়স্ক ভাতা পান, সে জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।