কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ

৮ দিন ধরে ফেরি বন্ধ, দুর্ভোগ

নাব্যতা-সংকটের কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে আট দিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

নাব্যতা-সংকটে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে টানা আট দিনের মতো ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এ পথের যাত্রীরা লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলারে পারাপার হচ্ছেন। তবে ফেরি না চলায় উভয় ঘাটে তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে।

নৌপথের মূল চ্যানেলটির দেড় কিলোমিটার এলাকা খনন শেষ হয়েছে। তবে পদ্মা সেতুর চায়না চ্যানেলের আধা কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় কয়েকটি ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। নদীর এই অংশে প্রচুর স্রোত। এ চ্যানেলে খনন ব্যাহত হচ্ছে।

জানতে চাইলে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘ফেরি না চলায় এ ঘাটে এখন পর্যন্ত ২০০ পণ্যবাহী ট্রাক পড়ে আছে। এই ট্রাকগুলো অন্য রুটে যেতে পারবে না। অন্য পথ দিয়ে গেলে ট্রাকপ্রতি কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হবে।’

খুলনা থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চালক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘২৮ আগস্ট কাঁঠালবাড়ি ঘাটের টার্মিনালে এসেছি। তখন ফেরি চলত। দুদিন পর আমার ফেরিতে ওঠার কথা। কিন্তু ১২ দিন হয়ে গেল এখনো পদ্মা পার হতে পারলাম না। এখানে থাকা-খাওয়া খুব কষ্ট। ঘাটে অলস বসে থেকে কীভাবে জীবন কাটাচ্ছি, কেউ জানে না।’

যশোর থেকে আসা সাইদুল বাশার নামের আরেক ট্রাকচালক বলেন, ‘মালভর্তি ট্রাক নিয়ে অন্য পথে গেলে আমার ২০ হাজার টাকা বেশি খরচ। মালিক এই টাকা দেবেন না। তাই রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘাটে পড়ে আছি।’

শুধু পণ্যবাহী ট্রাকের চালকেরাই নন, ফেরি বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরাও দুর্ভোগে পড়েছেন। কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকারও।

বিআইডব্লিউটিএর খননকাজ চলছে। কাজ শেষ না করলে ফেরি চালাতে পারব না।
আবদুল আলিম, ব্যবস্থাপক, বিআইডব্লিউটিসি, কাঁঠালবাড়ি ঘাট

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল আলিম বলেন, ‘নাব্যতা-সংকটের কারণে আট দিন ধরে একটি ফেরিও চলেনি। এতে সরকারের দেড় কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। উল্টো পথ ঘুরে যেতে যাত্রীদের দুর্ভোগও বাড়ছে। বিআইডব্লিউটিএর খননকাজ চলছে। কাজ শেষ না করলে ফেরি চালাতে পারব না।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, নৌপথের মূল চ্যানেলটির দেড় কিলোমিটার এলাকা খনন শেষ হয়েছে। এই চ্যানেল দিয়ে ছোট ফেরি চলতে পারবে। তবে পদ্মা সেতুর চায়না চ্যানেলের আধা কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় কয়েকটি ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। নদীর এই অংশে প্রচুর স্রোত। এ কারণে এ চ্যানেলে খনন ব্যাহত হচ্ছে।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, ‘নৌপথে একাধিক মেশিন বসিয়ে ড্রেজিং শুরু করেছিলাম। স্রোতের কারণে বাধার মুখে পড়েছি। তাই চায়না চ্যানেলে এখনো খনন শেষ হয়নি। দুই-তিন দিনের মধ্যে আশা করছি ড্রেজিং শেষ হবে।’