শিমুলিয়া–কাঁঠালবাড়ি–মাঝিকান্দি নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ফারজানা–১০। নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী লঞ্চটির ওপরের ডেকে ১০ জন যাত্রীর আসন থাকার কথা। তবে বসানো হয়েছে ৭০টি। আর যাত্রীও পরিবহন করা হচ্ছে ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।
অনুমোদনের চেয়ে বেশি আসন বসানো নিয়ে কথা হয় লঞ্চটির মালিক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে। তবে বিষয়টি এড়িয়ে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘নকশা অনুযায়ী আসন বসানো হয়েছে। তা ছাড়া এটা তো নতুন লঞ্চ নয়। ১৪–১৫ বছর ধরে এ নৌপথে চলছে লঞ্চটি।’
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি-মাঝিকান্দি নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোর আসনসংখ্যাসহ নানা ত্রুটির বিষয় উল্লেখ করে তা দ্রুত সমাধানের জন্য ৯ মার্চ বাংলাদেশ লঞ্চমালিক সমিতির মাওয়া শাখার সভাপতিকে চিঠি দেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের এই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক মো. জহিরুল কাইয়ুম।
চিঠিতে বলা হয়, নৌপথটিতে চলাচলকারী ৮৪টি যাত্রীবাহী লঞ্চের ৬৫টিই ওপরের ডেকে অনুমোদনের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আসন বসিয়েছে। এর মধ্যে এমভি হায়দার হোসেন লঞ্চে আসনসংখ্যা থাকার কথা ছিল ২০টি। তবে বসানো হয়েছে ৪০টি। এমএল বেপার-২-এ ১৫টি আসনের পরিবর্তে ৩৫টি, এমএল রাজিব এক্সপ্রেসে ১২টি আসনের পরিবর্তে ৪৪টি, এমএল পানিরাজে ২৪টি আসনের পরিবর্তে ৬৮টি, এমভি ফারজানা-৯-এ ৩৭টি আসনের পরিবর্তে ৭৬টি, এমএল আমজাদ-১ লঞ্চে ২০টি আসনের পরিবর্তে ৫২টি ও এমভি দুদু মিয়া লঞ্চে ২২টি আসনের পরিবর্তে ৭১টি আসন বসানো হয়েছে।
চিঠিতে জহিরুল কাইয়ুম বলেন, বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করে এ নৌপথের লঞ্চগুলোতে নানা ত্রুটি ধরা পড়ে। এ ছাড়া নৌযানগুলোর ওপরের ডেকে যাত্রীদের হাতের নাগালে বয়া রাখার ব্যবস্থা নেই। প্রায় সব নৌযানেই ওপরের ডেকের পেছনের খালি জায়গা ও পেছনের ছাদে যাত্রী পরিবহন করা হয়। এতে নৌযানের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
আসন্ন ঝোড়ো মৌসুমে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চের ত্রুটি সারানোর জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। এ ছাড়া ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করারও অনুরোধ করা হয়।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চের ত্রুটি খতিয়ে দেখতে আমরা এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব।’