চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে মা ইলিশ শিকারের ওপর ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা ছিল। এর মধ্য দিয়ে নদী দুটির মিঠাপানিতে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ৮০ ভাগ বড় ইলিশ এ সময়ের মধ্যে ডিম ছাড়তে পারেনি বলে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি।
গত তিন দিন বড় স্টেশন মাছঘাটের আড়ত ঘুরে অধিকাংশ মা ইলিশের পেটে ডিম পাওয়া গেছে। এ সময় স্থানীয় ইলিশ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ ইলিশের পেটভর্তি ডিম। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, ৮০ শতাংশ ইলিশই ডিম ছেড়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে মাছঘাটে গিয়ে কথা হয় ইলিশ ব্যবসায়ী ও চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হজরত আলী ব্যাপারীসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, অভিযান শেষ হওয়ার পরদিন থেকে জেলেরা নদী বা সাগর থেকে যেসব ইলিশ ধরে নিয়ে আসছেন, এর ৮০ ভাগের পেটে ডিম রয়ে গেছে। তাই এ বছর ইলিশের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত। হজরত আলীর মতে, ইলিশ গবেষণায় বা সিদ্ধান্তে ভুল ছিল। নিষেধাজ্ঞার সময় বড়জোর ২০ ভাগ ইলিশ ডিম ছাড়তে পেরেছে। ৮০ ভাগ ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। তবে মা–ইলিশ শিকারের ওপর আরও অন্তত ১০–১৫ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকলে শতভাগ ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেত।
তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকি বলেন, এবার মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল হয়েছে। এ কারণেই নদী বা সাগরে জেলেরা এখন প্রচুরসংখ্যক ইলিশ ধরতে পারছেন। এখন শিকার করা ২০ ভাগ ইলিশের পেটে ডিম দেখা যাচ্ছে। ইলিশ গবেষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ ইলিশই ডিম ছেড়েছে। বাজারে যেসব ইলিশ দেখা যাচ্ছে, এগুলো অভিযানের আগে ধরা; যা বিভিন্ন মৎস্য হিমাগারে সংরক্ষিত ছিল। এখন ব্যবসায়ীরা এগুলো বাজারে বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আরও সাত দিন এ বিষয়ে গবেষণা চালাব। এরপর বলতে পারব কত ভাগ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে।’