‘পড়াশোনা হোক আনন্দময়’ এই স্লোগান দিতে দিতে আজ রোববার বেলা ১১টায় কক্সবাজার শহরের সাংস্কৃতিককেন্দ্রের প্রাঙ্গণ থেকে পদযাত্রা শুরু করলেন উদ্যমী ১০০ তরুণ। পাঁচ দিনে এই তরুণেরা হাঁটবেন কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ৮০ কিলোমিটার পথ।
এক দিকে উঁচু সারিবদ্ধ সবুজ পাহাড়, অন্যদিকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত—এই দুইয়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়া দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারী তরুণদের মনে ভিন্ন আমেজ এনে দিচ্ছে। পদযাত্রায় তারুণদের হাতে বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত ফেস্টুন-ব্যানার ভ্রমণে আসা পর্যটকসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের নজর কাড়ছে। মেরিন ড্রাইভে এমন পদযাত্রা আগে চোখে পড়েনি।
বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সার্ভ হিউম্যান ফাউন্ডেশন’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে। পদযাত্রার উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং ভোলা জেলা ও দায়রা জজ মহসিনুল হক। মহসিনুল হক বলেন, ২০২১ সালে দেশের দুই হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে সার্ভ হিউম্যান ফাউন্ডেশন। ওয়েব, গ্রাফিকস ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, থ্রিডি অ্যানিমেশন, ভিডিও এডিটিং, ইংলিশ ফর ফ্রিল্যান্সিংসহ নানা বিষয়ে অনলাইনে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম দেশের তরুণসমাজের কাছে তুলে ধরতে এ পদযাত্রার আয়োজন। অংশগ্রহণকারী ১০০ উদ্যমী তরুণের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর। তবে নানা কারণে এ যাত্রায় নারীরা অংশ নেননি।
মহসিনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে তরুণদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দেশের জন্য অবদান রাখতে তরুণদের আগ্রহ জাগিয়ে তোলাই সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য।
উদ্বোধনীর প্রথম দিন হোটেল মোটেল জোনের কলাতলী সড়ক দিয়ে মেরিন ড্রাইভের উখিয়া সোনারপাড়া পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার হাঁটবে দলটি। এরপর দলটি সেখানকার সোনারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে রাত্রি যাপন করবে। পরের দিন সোমবার সকালে উখিয়ার মনখালী পর্যন্ত হাঁটবে আরও ২০ কিলোমিটার। ওই দিন সেখানকার মনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাত্রিযাপন এবং ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর মেরিন ড্রাইভের আরও ৩৫ কিলোমিটার হেঁটে পৌঁছাবে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর তল্লাশিচৌকি এলাকায়। সেখানকার হাজমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাত্রিযাপন শেষে পরদিন ৩০ ডিসেম্বর পাঁচ দিনব্যাপী পদযাত্রার সমাপ্তি ঘটবে।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, পাঁচ দিনব্যাপী পদযাত্রায় গান–কবিতা–গল্প–আড্ডার তালে তালে দলটি প্রতিদিন গড়ে ১৬ কিলোমিটার হাঁটবে। এর মধ্যে চলবে খাওয়া, সমুদ্রস্নান ও রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
পদযাত্রার গ্রোগ্রাম ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম বলেন, তারুণ্যের শক্তিতে জাগছেন তরুণেরা। বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভের দৃষ্টিনন্দন, সুন্দর ও ভিন্ন মাত্রার পরিবেশ তাঁদের উজ্জীবিত রাখছে।