রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয় দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হননি। এ সময় বিভাগে রোগী শনাক্ত হলেও অবস্থা গুরুতর না হওয়ায় তাঁরা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা।
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নূরুন্নবী লাইজু আজ রোববার প্রথম আলোকে জানান, ৭১ শয্যার করোনা ইউনিটে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কোনো করোনা রোগী ভর্তি হননি। তাই করোনা ওয়ার্ডে কর্মরত চিকিৎসক-নার্সদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
অধ্যক্ষ বলেন, কিছুদিন আগেও রোগী ছিলেন ৫০ জনের বেশি। আর অক্সিজেন পেতে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলারও প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এখন কিছুই লাগছে না।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত এক সপ্তাহে রংপুর জেলায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৫৯। গত এক মাস আগেও জেলায় এক দিনে শতাধিক রোগী শনাক্তের ঘটনা ঘটেছিল। এখন যাঁরা নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন, তাঁরা কম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন বলে বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েছেন নগরের সাগরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুদ খান। তিনি বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই ছিলাম। জ্বর,সর্দি–কাশি ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি। এখন সুস্থ।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাহমুদ হোসেন বলেন, কয়েক দিন আগেও দিন-রাতে করোনা রোগীদের সেবায় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। এখন করতে হচ্ছে না।
নাসরিন আক্তার নামের এক নার্স বলেন, ‘করোনো রোগীদের সেবা দিতে কী যে কষ্ট গেছে। খাওয়া–দাওয়ারও ঠিক ছিল না। এরপর নিজের করোনায় আক্রান্ত হওয়া নিয়ে অনেক বেশি ভয় ছিল। তবে এখনো যে ভয় নেই তা নয়।’
আজ দুপুরে রংপুর মেডিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, সাধারণ রোগী ও স্বজনদের মধ্যেও করোনার শঙ্কা অনেকটা কমে গেলেও সবার মুখে মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে দেখা যায় সবাইকে।
রংপুর জেলা প্রশাসক ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আসিব আহসান বলেছেন, করোনার সংক্রমণ কমে গেলেও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। জনসচেতনতার কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। চিকিৎসক–নার্সরা সব সময় কাজ করেছেন। তা এখনো অব্যাহত আছে।