নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানার ৬ তলার আগুন নেভানোর পর ডাম্পিং ও লাশের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নতুন করে লাশ পাওয়ার কোনো তথ্য জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
উদ্ধারকাজে যুক্ত ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগুন নিয়ন্ত্রণের পরও ভবনের বিভিন্ন জায়গার ধ্বংসস্তূপ থেকে আগুনের শিখা জ্বলে। ফায়ার সার্ভিসের ভাষায় একে ডাম্পিং বলা হয়। সেসব আগুন নেভানো ও লাশের খোঁজে নেমেছেন তাঁরা।
ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দিন মনি শর্মা প্রথম আলোকে বলেন, ৬ তলার আগুন নেভানো হয়েছে। তবে ওই ফ্লোরের বিভিন্ন স্থানে ডাম্পিং হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০ জনের একটি দল সেখানে ঢুকেছে। তারা ডাম্পিংয়ের আগুন নেভানোর পাশাপাশি আরও লাশ রয়েছে কি না, সেই তল্লাশি চালাচ্ছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তারা কোনো লাশের সন্ধান পায়নি। তিনি বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে ডাম্পিংয়ের ভেতর থেকে আগুন বের হচ্ছে। ভবনের উত্তর ও পশ্চিম পাশে এখনো ডাম্পিংয়ের আগুন রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই আগুনের ঘটনায় প্রথম দিন তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর গতকাল শুক্রবার ওই ভবনের চারতলা থেকে ২৬ নারীসহ ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করে। সব মিলিয়ে ৫২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আগুনে লাশ পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কারখানায় প্রায় ২০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন। নিখোঁজের তালিকায় ৫২ শ্রমিকের নাম আছে।
এদিকে আগুনের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা পরিদর্শন ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। নিহত প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্।