ভোলা এখন যেন ব্যানার আর পোস্টারের শহর। অলিগলি থেকে শুরু সড়ক কিংবা দেয়ালে ঝুলে আছে বর্ণিল ব্যানার-পোস্টার। এসব ব্যানার-পোস্টারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের পছন্দের ব্যক্তিকে দলের সভাপতি-সম্পাদক পদে নির্বাচিত করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর কাল শনিবার ভোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি-সম্পাদক পদে একাধিক ব্যক্তির নাম এসেছে। তবে ব্যানার-পোস্টারে সভাপতি পদের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মমিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (৩) মইনুল হোসেন—এ দুজনের নাম বেশি উঠে এসেছে। এ ছাড়া সভাপতির দৌড়ে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোলা পৌরসভার মেয়র ও জেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নামও শোনা যাচ্ছে।
এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়। ওই কমিটিতে ফজলুল কাদেরকে সভাপতি ও আবদুল মমিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। ভোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেন।
এরপর চলতি বছর ১৬ মার্চ ভোলার বাংলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ওই সভায় তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, ‘সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতা উপস্থিত থাকবেন। তাঁদের কাছে একটাই অনুরোধ আমার, ভোলার সম্মেলন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে হবে। দরকার হলে ভোটাভুটির মাধ্যমে কমিটি গঠন হবে।’ সেদিন থেকে তৃণমূল নেতারা গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচনের আশায় আছেন।
সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই, ভোটের মাধ্যমে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটুক। বিগত সময়ে যাঁরা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন, কর্মীদের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিয়েছেন, তাঁদেরই ভোটাররা নির্বাচিত করতে চায়।’
সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইউনুস মিঞা বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের চাহিদা হচ্ছে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন কমিটি আসুক। তবে সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সিদ্ধান্তই হলো শেষ সিদ্ধান্ত।
ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সংসদ সদস্য ও লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চান তাহলে ভোট হবে। আর প্রধানমন্ত্রী যদি সিলেকশন (নির্ধারণ) করে দেন, আমরা তা–ই মেনে নেব।’