জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর-উলিয়া সড়কের হরকা সেতু এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার বন্যায় ধসে যায়। গত দুই বছরেও সেই ধসে যাওয়া অংশটুকু মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে যানবাহনের পাশাপাশি পথচারীরাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্ভোগ লাঘবে ভাঙা অংশে একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখনো প্রকল্প তৈরি হয়নি। প্রকল্প তৈরি নিয়ে আলোচনা চলছে।
গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মাহমুদপুর বাজার থেকে ইসলামপুর উপজেলার উলিয়া বাজার পর্যন্ত একটি পাকা সড়ক। মাহমুদপুর বাজার থেকে এক কিলোমিটার সামনে হরকা সেতু। সেখানে প্রায় ৫০০ মিটার সড়ক ভাঙা। ভাঙা অংশে কাঠের একটি সাঁকো আছে। কিন্তু সাঁকোটিও ভেঙে যাওয়ায় লোকজন সেটি দিয়ে চলাচল করতে পারে না। তবে নিচ দিয়ে মাটি কেটে কোনোরকমে যানবাহন চলাচল করছে। হঠাৎ একটি ইটবাহী ভটভটি ভাঙা অংশে আটকে গেলে দুই পাশে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। এরপর যাত্রীরা হেঁটে ভাঙা অংশ পার হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে বন্যায় মাহমুদপুর-উলিয়া সড়কটির হরকা সেতু এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার ধসে যায়। এরপর আর মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। লোকজন বর্ষা মৌসুমে নৌকায় পারাপার হয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে স্থানীয় লোকজন ভাঙা অংশে মাটি ফেলে ছোট রাস্তা তৈরি করেন। তারপর থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এ সড়ক দিয়ে ইসলামপুর উপজেলার নতুনপাড়া, তারতাপাড়া, নোয়ারপাড়া, রামভদ্রা, কড়ইতার, রাজনগর, উলিয়া ও চিনাডুলী গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। এ ছাড়া মেলান্দহের মাহমুদপুর গ্রামের লোকজন এ সড়ক দিয়ে ইসলামপুর উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।
তারতাপাড়া গ্রামের রিকশাচালক মুসলিম উদ্দিন বলেন, ভাঙার পর থেকে এ সড়কে তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রায়ই যানবাহন উল্টে যায়। বর্ষায় দুর্ভোগ আরও বাড়ে। ভাঙা অংশে অনেক পানি জমে। তখন যানবাহন নিয়ে পারাপার হওয়া যায় না। নৌকায় করে পার হতে হয়।
ট্রাক্টরচালক আহম্মেদ আলী জানান, এদিক দিয়ে মাহমুদপুর বড়বাজার ও জেলা সদরে যেতে সময় অনেক কম লাগে। ফলে ইসলামপুরের গ্রামগুলোর লোকজনের জন্য সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বন্যায় ভাঙার পর সড়কটি আর মেরামত করা হয়নি। তিনি বলেন, গ্রামবাসী বন্যার সময় নৌকায় পাঁচ টাকা দিয়ে পার হয়েছে। শুকিয়ে যাওয়ার পর অল্প মাটি দেওয়া হয়েছে। এখন সেখানে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে যেতে হয়। খুব দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া না হলে সামনের বর্ষাতেও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
নোয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাদা বলেন, তাঁরা ইসলামপুর উপজেলার বাসিন্দা হলেও মেলান্দহের মাহমুদপুর বাজারটি তাঁদের খুব কাছে। ফলে যমুনা নদীবেষ্টিত লোকজন ওই বাজারে বেশি যান। কিন্তু ভাঙা অংশের কারণে তাঁরা দুই বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বর্ষায় নৌকা করে পারাপার হতে হয়। আর শুকনো মৌসুমে সবাই মিলে মাটি ফেলে চলাচল করতে হয়।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ওই ভাঙা অংশে একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখনো প্রকল্প তৈরি করা হয়নি। প্রকল্প তৈরি নিয়ে আলোচনা চলছে।