২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় করা ‘গায়েবি মামলা’য় ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ রোববার আদালতে উপস্থিত ৩৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সমর্থিত জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ শরিফুল ইসলামের নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে ওই মামলা করা হয়।
মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণ শেষে আজ দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আছমা মাহমুদ ওই ৩৮ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাঁদের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এম আর ইসলাম ও উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী বিউটি বেগম রয়েছেন। তাঁরা নির্বাচনে নাগরিক ঐক্যের নেতা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদুর রহমান মান্নার কর্মী ছিলেন।
মাহমুদুর রহমানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা শুরু থেকেই মামলাটিকে ‘গায়েবি’ দাবি করে আসছেন।
মাহমুদুর রহমানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা শুরু থেকেই মামলাটিকে ‘গায়েবি’ দাবি করে আসছেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১ সপ্তাহ আগে শিবগঞ্জের চকরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয় পার্টির কর্মী রাকিবুল হাসান থানায় মামলাটি করেন। এতে ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১২-১৩ জনকে আসামি করা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২২ ডিসেম্বর রাত সোয়া ১০টার দিকে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের কাগইল রাস্তার পাশে চৌকির ঘাট এলাকায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী শরিফুল ইসলামের নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান আসামিরা।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, আসামিরা প্রথমে হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন। পরে জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তখন অভিযোগপত্র দাখিল পর্যন্ত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এতে মামলার ১ নম্বর আসামি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম, মোকামতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মামুন তালুকদারসহ ১৪ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এরপর আরও ১১ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। আজ আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের পক্ষে যুক্তি-তর্ক তুলে ধরেন। আদালত শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ ও জামিন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল বাছেদ ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। তাঁদের মধ্যে আবদুল বাছেদ বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে জেলা জজ আদালতে আবার জামিনের আবেদন করা হবে।