৩৯ ঘণ্টা পর কুমিল্লা থেকে সংবাদপত্রের এজেন্টকে উদ্ধার

অপহরণ
প্রতীকী ছবি

গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ৩৯ ঘণ্টা পর সংবাদপত্রের এজেন্ট এস এম ইয়াছিনকে (৫৭) ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। ইয়াসিনের দাবি, গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে অপহরণকারীরা তাঁকে কুমিল্লার চান্দিনা থানার মাধাইয়া বাজার এলাকায় ছেড়ে দিয়ে গেছে।

ইয়াছিন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বারআউলিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রের এজেন্ট (বিক্রেতা)। এর আগে গত রোববার সকাল সাতটার দিকে বারআউলিয়া এলাকায় তাঁর নিজের সংবাদপত্র বিক্রির কার্যালয় থেকে এস এম ইয়াছিন নিখোঁজ হন। ওই সময় তাঁর পরিবারের স্বজনেরা জানিয়েছিলেন, অপহরণকারীরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাঁকে তুলে নেয়।

এ বিষয়ে ইয়াসিনের ভাই মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ভালো আছেন। ভাইকে উদ্ধারে আমরা সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশকে নিয়ে কুমিল্লায় যাচ্ছি।’
মুক্তি পাওয়ার পর ইয়াসিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিনের মতো রোববার সকালে তিনি নিজ কার্যালয়ে বসে হকারদের কাছে সংবাদপত্র ভাগ করে দেন। এরপর সকাল সাতটার দিকে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস থেকে তিন ব্যক্তি নেমে নিজেদের ডিবি পরিচয় দেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলে ওই তিন ব্যক্তি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। এরপর তাঁর চোখ বেঁধে অজ্ঞাতনামা একটি ঘরে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে দু-তিনজন তাঁকে পাহারা দিয়েছে। অপহরণকারীরা তাঁর সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেনি। সময়মতো খাবারও দিয়েছে বলে জানান তিনি।

ইয়াসিন বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে অপহরণকারীরা একটি খালি স্ট্যাম্পে তাঁর স্বাক্ষর নেয়। এ সময় তিনি স্বাক্ষর করতে না চাইলে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। স্বাক্ষর দেওয়ার পর অপহরণকারীরা তাঁর কাছে কত টাকা আছে, তা জানতে চায়। এরপর তাঁর কার্যালয়ের ক্যাশে থাকা ছয় হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে আসে অপহরণকারীরা। পরে তিনি বাড়িতে যাওয়ার জন্য গাড়িভাড়া বাবদ অপহরণকারীদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা চেয়ে নেন। পরে তারা একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে মাধাইয়া বাজারে নামিয়ে দেয়। গাড়ি থেকে নেমেই তৎক্ষণাৎ তিনি বিষয়টি বাজারে থাকা পুলিশকে জানান।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে দেবীদ্বার থানা-পুলিশের সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা পুলিশ পাঠিয়ে ইয়াছিনকে থানায় এনেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াসিন জানিয়েছেন, ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। ছেড়ে দেওয়ার আগে সাদা স্ট্যাম্পে তাঁর স্বাক্ষর ও পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকার হকার মো. আজিজ। তিনি বলেন, মাইক্রোবাসটিতে ছয়-সাতজন বসে ছিলেন। তাঁদের গায়ে ডিবির জ্যাকেট ছিল। এমনকি যে তিনজন ইয়াছিনকে তুলে নিয়ে যান, তাঁদের দুজনের গায়ে ডিবি লেখা জ্যাকেট ছিল।

তবে চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেশব চক্রবর্তী বলেন, তাঁরা ইয়াছিন নামের কাউকে গ্রেপ্তার করেননি।