সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ২ নম্বর ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক না থাকায় বৃষ্টি–কাদায় আটকে যাচ্ছে গাড়ি।সোমবার দুপুরে
সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ২ নম্বর ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক না থাকায় বৃষ্টি–কাদায় আটকে যাচ্ছে গাড়ি।সোমবার দুপুরে

সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাট

২ নম্বর ফেরিঘাটে নেই সংযোগ সড়ক, কাদায় গাড়ি আটকে ভোগান্তি

বৃহস্পতিবার থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চালাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে শরীয়তপুরে জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথের সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটে গাড়ির চাপ বেড়েছে। কিন্তু সেখানকার ২ নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়ক না থাকায় কাদা-বৃষ্টিতে গাড়ি আটকে যাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

নতুন ওই ঘাট এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, গত ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিতে জাজিরার সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটের পাশে নতুন আরেকটি ঘাট স্থাপন করা হয়। কিন্তু ওই ঘাটের পন্টুন থেকে গাড়ি নামার পর মূল সড়কে যেতে কোনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ওই স্থানে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। ওই কাদার মধ্য দিয়ে ২০০ মিটার পথ ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাতে হচ্ছে চালকদের। অনেক গাড়ি কাদায় আটকে যাচ্ছে। তখন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

সূত্র আরও জানায়, জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথের সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাট দিয়ে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হয় না। ওই ঘাট দিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি, জরুরি সেবার গাড়ি, সরকারি গাড়ি ও জরুরি কাঁচা পণ্যের গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র জানায়, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে স্রোত। মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চালাচল করতে হয় পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে। গত বছর স্রোতের কারণে কয়েক দফায় ফেরি সেতুর পিলারে ধাক্কা দেয়। এ কারণে সেতুর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই নৌপথে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর থেকে জাজিরার সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। এ ঘাট থেকে ৭টি ফেরি চলাচল করছে। এর মধ্যে তিনটি ফেরি শুধু দিনে চলে। বাকি চারটি ফেরি চলাচল করে রাতে।

সোমবার দুপুরে সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ২ নম্বর ঘাট থেকে নামতে গিয়ে কয়েকটি প্রাইভেট কার কাদায় আটকে গেছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তা নিয়ে চালকেরা গাড়িগুলো কাদা থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

এমন একটি প্রাইভেট কারের চালক রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে ঝালকাঠি যাচ্ছিলাম। ফেরির গ্যাংওয়ে থেকে নামার পরই মাটির পথ। সেখানে ছোট ছোট গর্ত। তাতে কাদাপানি জমে আছে। এর মধ্যে গাড়ি আটকে যাচ্ছে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় কাদা থেকে গাড়ি টেনে তুলেছি।’

ওই সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সড়ক বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ও সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহম্মেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুটি ফেরিঘাট দিয়ে যানবাহন ওঠানামা করছে। এর একটি সড়কের মাথায়, আরেকটি সড়ক থেকে ২০০ মিটার দূরে। ওই ২০০ মিটার অংশে কাদাপানি জমে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।

জানতে চাইলে শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ভূইয়া রেদওয়ানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কের বাইরে যে জায়গা যানবাহন চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, তা সেতু বিভাগের। সেখানে আমরা উন্নয়নকাজ করতে পারছি না। তা ছাড়া আগামী মাসে পদ্মা সেতু চালু করা হচ্ছে। তখন ঘাটের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।’