নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পায়রা বন্দর হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন। পায়রা বন্দর ঘিরে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে। চার লেনের সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে পায়রা বন্দর–সংলগ্ন এলাকায় শেরে বাংলা নৌঘাঁটি নির্মাণের কাজ চলছে। এককথায় পায়রা সমুদ্রবন্দর ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন হচ্ছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শন শেষে রোববার বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। পায়রা বন্দরের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পায়রা বন্দর–সংলগ্ন রাবনাবাদ চ্যানেলের নাব্যতা ১৪ মিটার পর্যন্ত রয়েছে। এরপরেও নাব্যতা বাড়াতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে। রাবনাবাদ চ্যানেল দিয়ে প্রতিদিন ২৫-৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লাবাহী জাহাজ চলাচল করছে। পায়রা বন্দরের মাধ্যমেই সেসব জাহাজের কয়লা খালাসের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ৭৩টি জাহাজে পণ্য আমদানির মধ্য দিয়ে এই বন্দর ১৭৮ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিন্দুকেরা যা–ই বলুক না কেন, সরকার দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কিছুই করবে না। সরকারের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে বলেই ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকার বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। দেশি-বিদেশি চক্র যতই ষড়যন্ত্র করুক, দেশের উন্নয়নে সরকার কখনো পিছপা হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে না। রাবনাবাদ চ্যানেলে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের কাজ চলছে। ২০২৩ সাল নাগাদ পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাংসদ মো. মহিব্বুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ কাজী কানিজ সুলতানা, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হুমায়ুন কল্লোল, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটি) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর আশরাফুল হক চৌধুরী, সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমোডর এম জাকিরুল ইসলাম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কমান্ডার এম রাফিউল হাসাইন, পরিচালক (প্রশাসন) মহিউদ্দিন আহমেদ খান, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার বিকেলে প্রতিমন্ত্রী সড়কপথে ঢাকা থেকে পায়রা বন্দরে আসেন। রাতে তিনি পায়রা বন্দরেই অবস্থান করেন। তিনি বন্দরের প্রশাসনিক দপ্তরের সামনে একটি ক্রিসমাস গাছের চারা রোপণ করেন। আজ সকালে তিনি নৌযানে করে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রাবনাবাদ চ্যানেল, ফাস্ট টার্মিনাল ও কয়লা টার্মিনাল নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করেন। এটি ছিল প্রতিমন্ত্রীর পায়রা বন্দরে দ্বিতীয় সফর। এর আগে তিনি ২০১৯ সালের ৮ মার্চ প্রথম পায়রা বন্দরে এসেছিলেন।