আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কারখানায় ভাঙচুর

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির দ্বিতীয় তলার চিত্র। আজ শুক্রবার সকালে তোলা
ছবি দিনার মাহমুদ।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানার আগুন ১৮ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করছে।

এ অগ্নিকাণ্ডে আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশত শ্রমিক। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক শ্রমিক। এদিকে নিখোঁজ শ্রমিকদের দ্রুত সন্ধান চেয়ে স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ সময় আটটি মোটরসাইকেল ও ১৫/২০ যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শুক্রবার সকাল ৮ টায় ।

আজ বেলা ১১টা দিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার ভেতরে প্লাস্টিক ও রাসায়নিক পদার্থ আছে। যে কারণে আগুন নেভানোর পর আবার জ্বলে উঠছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করছে। কারখানার নিচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত তাঁরা আগুন নেভাতে পেরেছেন। কিন্তু পঞ্চম তলা ও ষষ্ঠ তলায় আগুন জ্বলছে। প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া ও আগুনের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রূপগঞ্জের ভুলতায় জুস কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪)। ঘটনাস্থলেই তাঁরা দুজন মারা যান। এরপর মোরসালিন (২৮) নামের একজন শ্রমিক প্রাণ বাঁচাতে ওই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দেন। মোরসালিনকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুসের কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিঁখোজ রয়েছেন তাসলিমা আক্তার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্বজনেরা। কারখানার ভেতরে শুক্রবার সকালে তোলা

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ প্রথম আলোকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম ব্যাপারীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং গুরুতর আহত ব্যক্তিদের পরিবারপ্রতি ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

পুড়ে গেছে মেশিনারিজসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি। শুক্রবার সকালে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির নিচতলার চিত্র