বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘সহজ’ অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কেটে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন ফাতেমা। ১৭ ঘণ্টা বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের হস্তক্ষেপে টিকিট হাতে পেয়েছেন তিনি।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় জাতীয় পরিচয়পত্র ও মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করে সহজ অ্যাপ দিয়ে টিকিট কাটেন ফাতেমা। ২৭ এপ্রিল ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের বীরশ্রেষ্ঠ সিরাজুল ইসলাম স্টেশন পর্যন্ত যেতে ‘দ্রুতযান এক্সপ্রেস’ ট্রেনের তিনটি এসি (শীতাতপনিয়ন্ত্রিত) টিকিট কাটেন তিনি। এ জন্য ৩ হাজার ২১৯ পরিশোধও করেন তিনি।
ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, টাকা পরিশোধের পর তাঁকে ওই ট্রেনের ‘গ’ বগিতে ৭২, ৭৩ ও ৭৪ নম্বর আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাঁচ মিনিট পর তিনি টিকিটের অনলাইন (পিডিএফ) কপি ডাউনলোড করে টিকিট নিতে বগুড়ার সান্তাহার স্টেশনে যান। টিকিট কাউন্টারে কর্তব্যরত বুকিং সহকারী ফাতেমাকে জানান, তাঁর টিকিটের কপি কমলাপুর স্টেশনের কাউন্টার থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে। তখন ফাতেমা তাঁকে বলেন, টিকিটের অনলাইন কপি তাঁর কাছে থাকলে কমলাপুর থেকে কীভাবে টিকিট বের করল? তখন বুকিং সহকারী বলেন, এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই বলতে পারবেন না, যেহেতু টিকিটটি অনলাইনে কাটা হয়েছে।
ফাতেমা বলেন, দিনভর তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ট্রেনের টিকিট বা টিকিটের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য সহজসহ রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়েও কোনো কূলকিনারা পাননি।
আজ রোববার দুপুরে বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টিকিটের অনলাইন কপিটি তাঁর কাছে পাঠাতে বলেন। তাঁর কাছে অনলাইন কপি পাঠানোর পর তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং কমলাপুর স্টেশনের বুকিং কাউন্টারে যেতে বলেন। আজ সকালে ফাতেমার স্বামী কাউন্টারে গেলে তাঁকে তিনটি টিকিট দেওয়া হয়।
সমস্যার বিষয়ে অসীম কুমার তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, এমন সমস্যা কীভাবে হলো, সেটা তিনি বুঝতে পারছেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান তিনি।
ফাতেমার স্বামী খুররুম জাহ মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকালও তিনি কমলাপুর স্টেশনের বুকিং কাউন্টারে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে তখন টিকিট দেওয়া হয়নি। রেলের মহাব্যবস্থাপক বলে দেওয়ায় আজ অনলাইন কপি নিয়ে কমলাপুরে যাওয়ার পর তিনটি টিকিট দেওয়া হয়েছে।