গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে এবার একটি সিংহী মারা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংহীটি মারা যায়। ১১টি জেব্রা আর এক বাঘের মৃত্যুর পরপরই সিংহীটির মৃত্যু হলো। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর বর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ১১ আগস্ট প্রথমবারের মতো ওই সিংহীর অসুস্থতার বিষয় জানতে পারেন কর্মকর্তারা। এর পেটের দিকে পানি জমে থলির মতো অংশ ঝুলে থাকতে দেখা যায়। সিংহীটির শারীরিক অসুস্থতা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই নিয়মিতভাবে জাতীয় চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর এ বি এম শহীদ উল্ল্যাহ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালের সার্জারি ও অবসটেট্রিকস বিভাগের পরিচালক মো. রফিকুল আলমের পরামর্শে পার্কের ভেটেরিনারি কর্মকর্তা চিকিৎসা দেন। এরপর বিভিন্ন সময় সিংহীটির বাঁ পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। একপর্যায়ে মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। একই সঙ্গে শ্বাসকষ্টজনিত লক্ষণ দেখা যায়। গতকাল বুধবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে সিংহীটি চার পা ঝাঁকুনি দিয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ে। এ সময় তার শরীর কাঁপতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান চিকিৎসা দেন। আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আগের মতো শ্বাসকষ্ট হয়। এ অবস্থায় সিংহীটিকে পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন চিকিৎসা দেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা একটার দিকে অসুস্থ সিংহীটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
জানুয়ারি মাসে কয়েক দফায় ১১টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে পার্কটিতে। একই মাসে মারা যাওয়া বাঘের শরীরে পাওয়া গেছে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সাফারি পার্কে সর্বশেষ একটি সিংহের মৃত্যু হয়েছিল। তখন কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, পার্কটিতে আর ১০টি সিংহ অবশিষ্ট থাকল। সে হিসাবে সিংহীর মৃত্যুর পর এখন অবশিষ্ট রইল ৯টি। এ ছাড়া সাফারি পার্কে বাঘের মৃত্যুর পর সে খবর দীর্ঘদিন গোপন রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন। তিনি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন।
জানুয়ারি মাসে কয়েক দফায় ১১টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে পার্কটিতে। একই মাসে মারা যাওয়া বাঘের শরীরে পাওয়া গেছে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু। একের পর এক প্রাণীর মৃত্যুর ঘটনায় এ পর্যন্ত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পার্কটির প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল কবির, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান ও সেখানকার বন্য প্রাণী চিকিৎসা কর্মকর্তা হাতেম জুলকারনাইনকে। এমন ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে আরও একটি প্রাণীর মৃত্যুতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিম, সদ্য যোগদান করা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এবং বন্য প্রাণী পরিদর্শক সরোয়ার হোসেন খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কেউ ফোন ধরেননি।
ভিডিও দেখুন