‘নো হেলমেট নো বাইক, সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ শীর্ষক দেশব্যাপী প্রচারাভিযানে বের হওয়ার আগে চুয়াডাঙ্গার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মাহমুদ ও সজিব। আজ বুধবার সকালে
‘নো হেলমেট নো বাইক, সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ শীর্ষক দেশব্যাপী প্রচারাভিযানে বের হওয়ার আগে চুয়াডাঙ্গার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মাহমুদ ও সজিব। আজ বুধবার সকালে

‘নো হেলমেট নো বাইক’

হেলমেট ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে দুই বন্ধুর দেশব্যাপী মোটরসাইকেল যাত্রা

মোটরসাইকেলচালকের পাশাপাশি আরোহীকে হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধিতে দেশব্যাপী প্রচারাভিযানে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই বন্ধু। করোনাকালীন ছুটিকে ইতিবাচক কাজে লাগাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাঁরা নিয়েছেন ‘নো হেলমেট নো বাইক, সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি। ২ জন ২টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৬৪টি জেলা পরিভ্রমণ করে এই সচেতনতা কর্মসূচি চালাবেন।

ওই দুই তরুণ হলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদ আল জান্নাত ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সজিব হাসান সাজ। তাঁদের দুজনেরই বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়।

আজ বুধবার সকাল সাতটায় চুয়াডাঙ্গার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে এই সচেতনতামূলক মোটরসাইকেল যাত্রা শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁদের পরিকল্পনা, আগামী ২২ দিনে সারা দেশ পরিভ্রমণ করবেন তাঁরা। প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচারাভিযান চালাবেন।

‘নো হেলমেট নো বাইক’ শীর্ষক দেশব্যাপী প্রচারাভিযানে বের হওয়ার আগে চুয়াডাঙ্গার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মাহমুদ ও সজিব। আজ বুধবার সকালে

মাহমুদ আল জান্নাত বলেন, ‘সজিব হাসান আমার শৈশবের বন্ধু। আমরা একই কিন্ডারগার্টেন, স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করেছি। আমাদের মানসিকতাও এক। করোনাকালীন বাড়িতে টানা ছয় মাসের বেশি সময় বাড়িতে থাকায় একঘেয়েমি পেয়ে বসেছিল। সর্বশেষ অক্টোবর মাসকেও সরকার ছুটি ঘোষণা করায় দুই বন্ধু ভালো কিছু করার জন্য আলোচনা করে এই প্রচারাভিযানে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’

মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে মোটরসাইকেলের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। একইভাবে দুর্ঘটনার হারও বেড়ে চলেছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী শুধুমাত্র হেলমেট ব্যবহার না করায় মোটরসাইকেলচালক ও আরোহীদের বেশির ভাগই দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছেন। অথচ একটু সচেতন হলে তা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বিষয়টি আমাদের ভাবিয়েছে।’

সজিব হাসানের ভাষ্য, সুরক্ষা সরঞ্জাম পরে ও ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালানোর কথা ইদানীং মেনে চলছেন মানুষ। বিশেষ করে সম্প্রতি ট্রাফিক পুলিশের কড়াকড়িতে অনেকেই হেলমেট ব্যবহার করছেন। এটা খুবই ভালো দিক। তারপরও মোটরসাইকেলচালকদের অনেকেই হেলমেট ব্যবহার করছেন না। আবার অনেক মোটরসাইকেলচালক নিজে হেলমেট ব্যবহার করলেও সহযাত্রীর মাথায় হেলমেট দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে শিশুসন্তানদের যে হেলমেট প্রয়োজন, বিষয়টি বেমালুম ভুলে যাচ্ছেন বা অবজ্ঞা করছেন। সজিব বলেন, ‘সবার হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই আমাদের দেশব্যাপী এই ক্যাম্পেইন।’

নিরাপদ সড়ক চাই চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যানুসারে, হেলমেটের ব্যবহার দুর্ঘটনায় মৃত্যুঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমাতে পারে এবং মারাত্মক হতাহতের ঝুঁকি কমায় ৭০ শতাংশ। তাই চালকের পাশাপাশি আরোহীদের হেলমেট পরা জরুরি। বিশেষ করে শিশুদের হেলমেট ব্যবহারের বিষয়টি জোরাল নজরদারির মধ্যে আনতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই বন্ধু এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগ নিয়েছেন—একে স্বাগত জানাই আমরা।’