নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে দোষীদের শাস্তি ও নিহত ব্যক্তিদের জনপ্রতি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রূপগঞ্জে পুড়ে যাওয়া ভবন পরিদর্শনে এসে জোটের নেতারা এ দাবি জানান।
বেলা ১১টায় জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল পুড়ে যাওয়া ভবন পরিদর্শনে আসেন। তাঁরা নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে নিয়ে ভবনটির চারতলা পর্যন্ত ঘুরে দেখেন। ভবনে প্রবেশ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। তাঁদের কেউ কেউ চারতলা ফ্লোরের বিভিন্ন অংশে ছুটে যান।
পরিদর্শন শেষে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন, শ্রমিক ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন বাম জোটের নেতারা। এ সময় তাঁরা নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহ পুনর্বাসন নিশ্চিত করা, কারখানামালিক ও কারখানা পরিদর্শকদের বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে বজলুর রশিদ বলেন, তাজরীন ফ্যাশন ও রানা প্লাজার মতো ভয়ংকর ঘটনায় বিচার না হওয়া এবং দেশে জবাবদিহিহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠায় বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠান চালু করতে অন্তত ২৭টি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন লাগে। এই কারখানায় কাজের পরিবেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারখানায় শিশু শ্রমিক কাজ করত। আগুন নেভানোর সামান্য ব্যবস্থাও ছিল না। এসব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা কী ছিল, সেটা দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট করতে হবে।
সমাবেশ থেকে কারখানার সব শ্রমিকের বেতন, ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধেরও দাবি জানানো হয়। এ সময় স্বজনেরা কারখানার কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা ও বেতন–ভাতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ কাফি রতন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শহীদুল ইসলাম সবুজ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।