শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাচার বিরুদ্ধে ভাতিজাকে হাত-পা বেঁধে বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত চাচার নাম আলীমদ্দিন (৫৫)। তিনি উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের তন্তর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে। নির্যাতনের শিকার নুর ইসলাম (৩৫) একই গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে।
গতকাল শনিবার দুপুরে এ ঘটনার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ গিয়ে নুর ইসলামকে উদ্ধার করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন নুর ইসলাম।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আলীমদ্দিন, তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম ও তাঁদের ছেলে মোক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে ওই নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, নুর ইসলামের সঙ্গে তাঁর চাচা আলীমদ্দিনের দুই একর জমি নিয়ে বিবাদ চলে আসছিল। এর জেরে গতকাল দুপুরে আলীমদ্দিন তাঁর স্ত্রী, ছেলেসহ আরও চার-পাঁচজনকে নিয়ে নুর ইসলামের বাড়ি যান। এ সময় নুর ইসলামের স্ত্রী-সন্তানকে খুন করার ভয় দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন তাঁরা। একপর্যায়ে একা বাড়িতে নুর ইসলামকে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর উঠানে মাটি খুঁড়ে তাঁকে বুক পর্যন্ত পুঁতে রাখা হয়। এ সময় আলীমদ্দিনের লোকজন নুর ইসলামের জমিতে ঘর তোলার কাজ করতে থাকেন।
এদিকে নুর ইসলামের স্ত্রী রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রহিমা বেগম এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কাওসার আহমেদকে খবর দেন। পরে তাঁরা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর তিনজন চৌকিদার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মাটি খুঁড়ে নুর ইসলামকে উদ্ধার করেন। আলীমদ্দিন, তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম ও ছেলে মোক্তার হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নালিতাবাড়ী থানা-পুলিশ জানায়, আহত নুর ইসলামকে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রাত ১১টার দিকে তিনি বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে নারী ইউপি সদস্য রহিমা বেগম বলেন, ‘নুর ইসলামের জমি দখল করতে এ নির্যাতন চালানো হয়। পুলিশ ও আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেছি। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি।’
জানতে চাইলে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে তাঁদের শেরপুর আদালতে পাঠানো হবে। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত।